এসআইয়ের বিরুদ্ধে কিস্তিতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

সিলেটের বিশ্বনাথ থানার এক সাব-ইন্সপেক্টরের (এসআই) বিরুদ্ধে কিস্তিতে এক লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ ওঠা এই সাব-ইন্সপেক্টরের (নিরস্ত্র) হলেন মো. আলীম উদ্দিন।
ফাঁস হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, থানা কম্পাউন্ডের বৈঠকখানায় বসে, গুনে দেওয়া ঘুষের কিস্তি হাসি মুখে পকেটে ভরছেন তিনি। টাকা পকেটে করে নেওয়ার সময় বলতে শোনা যায়, চার্জশিটের জন্য লাগবে পুরো ২০ হাজারই। অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, মামলার এমসির জন্য অন্য কিস্তির পুরো ২০ হাজারের জন্য দেন-দরবার করছেন তিনি।
সূত্র জানায়, গত বছরের ২০ আগস্ট উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আনপুর গ্রামের মকবুল আলী ও জুনেদ হোসেন গংদের মধ্যে বিরোধের জেরে সংঘরর্ষ হয়। এ ঘটনায় মকবুল আলী প্রতিপক্ষ জুনেদ গংদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ক্রমান্বয়ে এ মামলার তদন্তভার পান এসআই মো. আলীম উদ্দিন। এদিকে আসামি পক্ষ নিজ তালতো ভাই, উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মৃত আবদুস সালামের ছেলে ফয়ছল আহমদকে (৩২) দায়িত্ব দেয় মামলার বিষয়টি তাদের হয়ে দেখভালের জন্য। এর সুবাদে তিনি মামলার বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ ও আইনি সহায়তা নিতে এসআই আলীম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে মামা-ভাগ্নের সম্পর্ক পাতেন চতুর আলীম। মামলার বিভিন্ন বিষয়ে ছাড় দেওয়ার লোভনীয় অফার দেন তিনি। প্রত্যেকটির জন্য বিনিময়ে দাবি করেন পৃথক পৃথক অনৈতিক সুবিধা (ঘুষ)। বিভিন্ন সময়ে ২০ হাজার করে ৪ কিস্তি ও ১০ হাজার করে ২ কিস্তিতে সুকৌশলে আদায় করে নেন লাখ টাকা। পরে কথামতো কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে ভয়-ভীতি দেখিয়ে, তাকেও (ফয়ছল) ফাঁসানোর হুমকি দেন।
ফয়ছল আহমদ অভিযোগ করে বলেন, ‘সরলতার সুযোগ নিয়ে হীন উদ্দেশ্যে সম্পর্ক পেতে, দারোগা আলীম আমাকে বোকা বানিয়ে ধোঁকা দিয়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের কাছে, আমার ব্যক্তিত্ব-সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কিস্তিতে লাখ টাকা নিয়েও, উল্টো আমাদের হয়রানি করেছেন। একবার কিছুটা সন্দেহ হলে, আমি লেনদেনের দুটি ভিডিও ধারণ করে রাখি। কথা মতো কাজ না করায়, টাকা ফেরত চাইলে তিনি উল্টো আমাকে ভয়-ভীতি দেখান। বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। শীঘ্রই এ বিষয়ে আমি পুলিশ সুপার বরাবরে প্রতিকার চাইবো।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই মো. আলীম উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর না দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও আর রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। আগে জেনে নেই। সত্য হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’