দুদকের অভিযোগ ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’, দাবি টিউলিপের

বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁকে ‘নিশানা করে ভিত্তিহীন’ অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক’ বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তাঁর আইনজীবীদের পাঠানো একটি চিঠিতে এ অভিযোগ করা হয়। পরে দুদকের পক্ষ থেকেও এ চিঠির একটি জবাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (১২ মার্চ) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতে লেবার মন্ত্রিসভার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে সরে দাঁড়ান টিউলিপ। ওই পদে তাঁর কাজ ছিল যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতের ব্যয় থেকে প্রায় ৩৯০ কোটি পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক।
দুদকের কাছে লেখা চিঠিতে টিউলিপের আইনজীবী স্টিফেনসন হারউডের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘দুদক বা বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কেউ তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ কোনো ক্ষেত্রেই সুষ্ঠুভাবে, সঠিক ও স্বচ্ছতার সঙ্গে আনেননি।’ অবিলম্বে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ অভিযোগ তৈরি বন্ধ এবং তাঁর ‘ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের লক্ষ্যে’ আর কোনো মিডিয়া ব্রিফিং ও প্রকাশ্য মন্তব্য না করতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
হারউড তাঁর দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, টিউলিপ কোনোভাবেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তিতে জড়িত ছিলেন না। যদিও ২০১৩ সালে ক্রেমলিনে একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁকে একই ছবিতে দেখা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে দুদকের পাল্টা চিঠিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তাঁর মতো একজন রাজনীতিবিদ কীভাবে সরলতার কারণে নির্দোষ থাকার দাবি করেন।
টিউলিপের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২০০৪ সালে লন্ডন কিংস ক্রস এলাকায় উপহার হিসেবে পাওয়া সাত লাখ পাউন্ডের ফ্ল্যাটটি কোনো না কোনোভাবে আত্মসাতের ফল বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা সত্য নয়। কারণ, এটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুক্তির ১০ বছর আগেকার ঘটনা। কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটটি তাঁকে দিয়েছিলেন আব্দুল মোতালিফ নামে এক ব্যক্তি, যাঁকে খুব ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধু এবং টিউলিপের গডফাদারের মতো বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গণমাধ্যমে দুদকের ব্রিফিংকে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অগ্রহণযোগ্য চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
দুদকের চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, বড় হওয়ার পর তিনি জীবনের বেশির ভাগ সময় দুর্বৃত্তায়িত আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠদের মালিকানাধীন বাড়িতে কাটিয়েছেন এবং এটিই প্রমাণ করে যে তিনি এই দলের দুর্নীতি থেকে লাভবান হয়েছেন।
এদিকে দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সাময়িকী দ্য টাইমসকে বলেছেন, ‘মিজ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমস্ত অভিযোগ যুক্তরাজ্যের আদালতসহ যেকোনো আদালতেই প্রমাণ করা যাবে।’