জুলাই বিপ্লবে আহত ৫২ জনকে তুরস্ক ও পাকিস্তানে নেওয়া হবে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, জুলাই বিপ্লবে এখন পর্যন্ত আহতদের চিকিৎসায় ২৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়েছে দুই রোগীর চিকিৎসায়। তাদের মধ্যে একজন রোগীর পেছনে সাড়ে ৬ কোটি ও অন্য রোগীর পেছনে সাড়ে ৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫২ জনকে তুরস্ক ও পাকিস্তানে নেওয়া হবে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এ তথ্য জানান।
নূরজাহান বেগম বলেন, জুলাই বিপ্লবে ৮৬৪ জন শহীদ ও ১৪ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের সুচিকিৎসা দিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশে চিকিৎসার পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জনকে থাইল্যান্ডে, ১৩ জনকে সিঙ্গাপুরে এবং একজনকে নেওয়া হয়েছে রাশিয়ায়। চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরত এসেছেন ২৬ জন।
নূরজাহান বেগম বলেন, ‘বিদেশে নেওয়াদের মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগই শ্রমিক তথা সাধারণ মানুষ। আর ৩০ ভাগ শিক্ষার্থী। ফলে শিক্ষার্থীরা ইংরেজি জানায় ভাষাগত সমস্যা না হলেও বাকিদের জন্য দোভাষী লেগেছে।’
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ৫২ জনকে তুরস্ক ও পাকিস্তানে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩১ জনকে তুরস্কে এবং ২১ জনকে পাকিস্তানে নেওয়া হবে। এছাড়া আরও ৮ জনকে থাইল্যান্ডের ভেজথানি হাসপাতালে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তাদের ইতোমধ্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তারপরও আরও চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কিনা সেটি পর্যালোচনা করতেই উদ্যোগ।
আহতদের খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আহতদের চিকিৎসায় ২৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেগেছে দুই রোগীর চিকিৎসায়। তাদের মধ্যে একজন রোগীর পেছনে সাড়ে ৬ কোটি ও অন্য রোগীর পেছনে সাড়ে ৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।’
স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নিজস্ব এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না থাকার বিষয়ে আক্ষেপ করে নূরজাহান বেগম বলেন, স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও দেশের নিজস্ব কোনো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নেই। ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে চারজনকে উন্নত চিকিৎসায় বিদেশে নিতে হয়েছে। এতে সরকারের খচর বেড়েছে।
নূরজাহান বেগম বলেন, ‘আহতদের মধ্যে ২১ জন দুই চোখ এবং ৪৫০ জন এক চোখ হারিয়েছেন। অন্যদিকে হাত অথবা পা কেটে ফেলতে হয়েছে ২১ জনের। এর মধ্যে হাঁটুর ওপরে কেটে ফেলতে হয়েছে ১৭ জনের। আর কনুই পর্যন্ত চারজনের। সারাদেশে এখনো দুই শতাধিক আহত ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের অনেককে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলেও তারা যেতে চাচ্ছেন না। এর বাস্তবতাও রয়েছে। তারা মারাত্মক ট্রমায় ভুগছেন। তারা হয়তো আস্থা রাখতে পারছেন না। জোড়াতালি দিয়ে তাদের মানসিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শুধু সরকার নয়, তাদের মানসিকভাবে সহযোগিতা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব।’