সুনামগঞ্জ মেডিকেলে শাটডাউন, লাঠিচার্জের প্রতিবাদে মশাল মিছিল
সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলাকালে সেনাবাহিনীর লাঠিচার্জ করার প্রতিবাদে প্রদীপ প্রজ্বালন ও মশাল মিছিল করেছে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সাথে কলেজের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘শাটডাউন’ ঘোষণা করা হয়েছে।
সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে প্রতীকী রক্তাক্ত অ্যাপ্রোন টানিয়ে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর আগে রোববার রাতে প্রদীপ প্রজ্বালন ও মশাল মিছিল করে তারা। কলেজের নিজস্ব হাসপাতাল কার্যক্রম চালু ও পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধার দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালে ওই দিন সেনাবাহিনী তাদের উপর লাঠিচার্জ করলে বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী আহত হন।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহপরান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রোববার সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করি। তখন ঘটনাস্থলে একদল সেনা সদস্য উপস্থিত হন। আমরা তাদের কাছে মাত্র ৫ মিনিট সময় চেয়েছিলাম। তারা আমাদের পাঁচ মিনিট সময় দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু মাত্র এক মিনিট আটত্রিশ সেকেন্ডের মাথায় আমাদের কাছ থেকে হ্যান্ড মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে সংবাদকর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।’
শাহপরান ভূঁইয়া বলেন, ‘এরপর নিরীহ শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। আমরা যখন স্বায়ত্তশাসিত সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিই, তখনো আমাদের উপর হামলা করা হয় এবং আমাদের অনেক সহপাঠী আহত হয়। এই ন্যাক্কারজনক ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে আমরা রাতে প্রদীপ প্রজ্বালন ও মশাল মিছিল করি।’
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আজ সোমবার থেকে আমরা সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণাঙ্গভাবে শাটডাউনের ঘোষণা দিই। পাশাপাশি সকালে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের পাশে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করি। এতে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে কলেজ প্রশাসন ও শিক্ষকমণ্ডলীর সদস্যরাও অংশগ্রহণ করেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এর প্রায় দুই বছর পর ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর হয় প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে কলেজে পাঁচটি ব্যাচে ২৮০ জন শিক্ষার্থী আছেন।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে নিজস্ব হাসপাতাল কার্যক্রম চালু ও পর্যাপ্ত ওয়ার্ড সুবিধার দাবিতে ক্লাস বর্জন করে ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।