নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে নারিকেল গাছের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বেঁধে রেখে নির্যাতন এবং তার ছেলে-মেয়েকে মারধর করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (২১ এপ্রিল) বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ নির্যাতন চলে। সদর উপজেলা সুলতানপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়া মন্তাজ মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, সৌদি প্রবাসী মো. হায়দার আলির স্ত্রী ও তার দুই ছেলে-মেয়েকে মারধর করছে তারই আপন দুই ভাই এবং ভাইয়ের বউ ও ভাতিজারা। একপর্যায়ে প্রবাসীর স্ত্রী শারমিন আক্তারকে বাসার উঠানের একটি নারকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ চিৎকার শুনে তারা গিয়ে দেখেন মন্তাজ মিয়ার ছোট ছেলে প্রবাসী হায়দার আলির স্ত্রী ও তার দুই সন্তানকে মারধর করছে তারই বড় ভাই মঙ্গল মিয়া, জয়নাল আবেদিন ও ভাতিজা জুবায়িদ, আকাশ, সাইফুল ইসলাম এবং ময়না বেগম, মর্জিনা বেগমসহ আরও অনেকে। একপর্যায়ে শারমিন আক্তারকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে তারা। পরে স্থানীয়রা বাধা দিলে তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়।
ভুক্তভোগী শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমি আমার স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম। হঠাৎ তারা আমাকে ঘর থেকে চুলের মুঠি ধরে উঠানে নিয়ে মারধর শুরু করে। এ সময় আমার ছেলে ও মেয়ে বাঁচাতে গেলে তাদেরকেও মারধর করে। তিন ঘণ্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে আমাকে নির্যাতন করার পর স্থানীয় এক মেম্বার এসে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করে আমাকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পাঠায়।’
চিকিৎসা শেষে ভুক্তভোগী শারমিন আক্তার বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় সাত জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও তিন-চারজনের বিরুদ্ধে সোমবার রাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, মন্তার মিয়ার ছেলে মঙ্গল মিয়া আগে থেকেই শারমিন আক্তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করিয়া আসছিল এবং কুপ্রস্তাব দিতো। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বাদীকে বসতঘরে এসে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ধর্ষণ করতে না পেরে এলোপাতাড়িভাবে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে বাকি আসামিরাও এসে তাকে মারধর করে বিবস্ত্র ও শ্লীলতাহানি করা হয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বাদীর গলায় থাকা এক ভরি ওজনের স্বর্নের চেইন, কানে থাকা আধা ভরি ওজনের কানের দুল ও বসতঘরে আলমারিতে থাকা স্বামীর বিদেশ থেকে পাঠানো সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে ভিকটিম মহিলা থানায় এসে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’