করোনাভাইরাসের প্রভাব খুলনার অর্থনীতিতে পড়ার আশঙ্কা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/02/10/khulna-china.jpg)
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাবে দেশটির আমদানি-রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি অন্য দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে।
স্বল্পমূল্যে চাহিদাসম্পন্ন পণ্য গ্রাহকদের কাছে তুলে দেওয়ার প্রতিযোগিতার দৌড়ে প্রথমেই রয়েছে চীন। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যই বাংলাদেশে রপ্তানি করে দেশটি। তবে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশের মতো খুলনার অর্থনীতিতে বড় হুমকি আসতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বলছেন, চীনা পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় এরই মধ্যে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে গেছে এবং এখন চীন থেকে আমদানি করা কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর চীন থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা নতুন পণ্য অর্ডার করতে পারছেন না।’
সভাপতি আরো জানান, দুই মাস আগে খোলা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের সংকট তৈরি হয়েছে।
কুঁচে ও কাঁকড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব মণ্ডল জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৪১ কোটি ৬২ লাখ টন কুঁচে এবং ৩৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকার কাঁকড়া রপ্তানি করেছে।
তবে ২৬ জানুয়ারি থেকে চীনে কুঁচে এবং কাঁকড়া রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
খুলনার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য মতে, বাংলাদেশ প্রতিবছর ৭০০ কোটি টাকার কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানি করে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ চীনে যায়।
এদিকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলেও চীনা পণ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। খুলনার বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে চীনা পণ্যের দাম ১০-২০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছে।
ওই এলাকার কারখানার মালিকরা জানিয়েছেন, কয়েকটি কারখানায় এরই মধ্যে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানার ৭০ শতাংশ কাঁচামাল চীন থেকে আনা হতো।
খুলনার ইয়াসিন আলী নামের এক ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানিকারক বলেন, চীনে ইলেকট্রনিক পণ্যের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং কবে থেকে তা পুনরায় চালু হবে এ নিয়ে কোনো আশ্বাসও পাওয়া যায়নি।
আলী বলেন, টিভি, কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, রিমোট এবং চীনের অন্যান্য খুচরা পণ্যের দাম ১০-২০ শতাংশ বেড়ে গেছে। আগমী ১৫ দিনের মধ্যে যদি এ পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তবে চীনা সব পণ্যের সংকট আরো তীব্র হবে।