করোনা মহামারির সময়ে দেশে আয়বৈষম্য বেড়েছে : বিআইডিএস
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/05/19/bids.jpg)
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) জানায়, করোনা মহামারির সময়ে বাংলাদেশে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে আয়বৈষম্য বেড়েছে। ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে ধনীদের আয় ৬৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আরও ধনী হয়েছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চমধ্যম আয়ের মানুষের আয় বেড়েছে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ, নিম্নমধ্যম আয়ের মানুষের আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ, দরিদ্রদের আয় বেড়েছে ১০ দশমিক ২ শতাংশ এবং অতি দরিদ্রদের আয় বেড়েছে ১৬ শতাংশ।
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালম্যানাক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান বলেন, “উচ্চ ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে আয়বৈষম্য সত্ত্বেও সরকারি চাকরির খরচ বাড়েনি। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতের সব গোষ্ঠীই সরকারি সেবা পাচ্ছে। একাডেমিক পাঠ ও নিয়োগকর্তার চাহিদা মিলছে না বলে কর্মসংস্থান বাড়ছে না, তাই শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, “কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির সরকারি নীতির ফলে গ্রামীণ বাংলাদেশে আয়বৈষম্য সংকুচিত হচ্ছে। গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, উন্নত সড়ক যোগাযোগ এবং অন্যান্য সুবিধা পাচ্ছেন।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, “ব্যাংকগুলো প্রতিদিন এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে প্রত্যয়পত্র বা লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলছে। ওভার ও আন্ডার-ইনভয়েসিং অথবা বাণিজ্যভিত্তিক অর্থ চোরাচালান রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব খতিয়ে দেখছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহ দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে, যাতে যেকোনো দেশের প্রবাসীরা তাদের মোবাইল ফোন থেকে বৈধ মাধ্যমে সহজেই রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেন।”
গভর্নর বলেন, “গত অর্থবছরে বেসরকারি খাতের বৈদেশিক ঋণ ছিল ১৭ বিলিয়ন ডলার, যা এখন দাঁড়িয়েছে ১৪ বিলিয়ন ডলারে এবং এসব ঋণ পরিশোধের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শিগগিরই একক বিনিময় হার নির্ধারণ করবে এবং এ বিষয়ে কাজ এগিয়ে চলছে।”
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন। অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন সিপিডির ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুস সাত্তার মণ্ডল, ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুব আলী, আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন।