পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে হিলি বন্দরের ব্যবসায়ীরা
আমদানি বন্ধের শঙ্কায় ভারত থেকে বেশি করে পেঁয়াজ এনে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা। পাচ্ছেন না দাম। নষ্ট হচ্ছে পচে। ফলে আমদানির সময় বাড়ালেও লোকসানের শঙ্কায় এ বন্দর দিয়ে দুদিন ধরে বন্ধ পেঁয়াজের আমদানি।
বন্দরের আমদানিকারকেরা জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার সর্বশেষ সময়সীমা গত ২৯ মার্চ পর্যন্ত বেঁধে দিয়েছিল সরকার। এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়। আমদানি বন্ধ থাকলে দাম কয়েক গুন বাড়বে—এমন আশায় বিপুল পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেন তাঁরা। এতে চাহিদার তুলনায় আমদানি বেশি হয়। অন্যদিকে আমদানি অব্যাহত রাখতে সরকারের ঘোষণায় দাম যায় কমে।
ব্যবসায়ীরা জানান, খুচরা বাজারে বর্তমানে ১৬-১৭ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগেও এই পেঁয়াজ মানভেদে ৪০-৪৫ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছিল।
বন্দরের আমদানিকারক বাবুল হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রমজানে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে আমদানির জন্য বেঁধে দেওয়া সময় প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু, রমজানকে সামনে রেখে আমরা আগেই বেশি করে পেঁয়াজ আমদানি করেছি। এখন দাম পড়ে যাওয়ায় সেই পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছি।’
বাবুল হোসেন আরও বলেন, ‘গুদামে মজুদ রাখা পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারছি না। আবার পেঁয়াজ সংরক্ষণ করাও যায় না। এতে করে গুনগত মান নষ্ট হচ্ছে। আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’
বন্দরের আরেক আমদানিকারক মোর্শেদুর রহমান জানান, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বাইরে থেকে ক্রেতারা হিলি বন্দরে আসছেন না। কারণ, তাঁদের এলাকায় পেঁয়াজের দাম কম। লোকসান লাঘবের জন্য আশপাশের বাজারে পেঁয়াজ ছেড়ে দিচ্ছি। তারপরও ক্ষতি ঠেকানো যাবে না বলেই মনে হচ্ছে।’
মোর্শেদুর বলেন, ‘সরকার যদি আগে থেকে আমদানি অব্যাহত রাখার কথা বলত, তাহলে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হতো না।’
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন উর রশিদ বলেন, ‘নতুন করে আমদানির সময় বৃদ্ধি করায় লোকসানের আশঙ্কায় করছেন ব্যবসায়ীরা। এ জন্য পেঁয়াজ আমদানি করছেন না তাঁরা।’
হারুন বলেন, ‘শুক্রবার পর্যন্ত বন্দরে তিন হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুদ আছে। ক্রেতা সংকটের কারণে বিক্রি হচ্ছে না সে সব পেঁয়াজ। আবার অতিরিক্ত গরমে পেঁয়াজে পঁচন ধরে যাচ্ছে।’
বন্দরের বেসরকারি অপারেটর পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত মঙ্গলবার ১১টি ভারতীয় ট্রাকে ২৫০ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। আগের দুদিন বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়নি।’
হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপসহকারী ইউসুফ আলী জানান, হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আগে দেওয়া ইমপোর্ট পারমিটের মাধ্যমে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শেষ সময়সীমা ২৯ মার্চ পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া ছিল। সে মোতাবেক গত মঙ্গলবার থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার ৩০ মার্চ নতুন করে আইপি অব্যাহত রেখেছেন। রমজানকে সামনে রেখে সরকার বাজারে পেঁয়াজর সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।