পোশাকশিল্পের করপোরেট ট্যাক্স শিগগির কমবে : বাণিজ্যমন্ত্রী
রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের করপোরেট ট্যাক্স কমানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিগগির তা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
আজ সোমবার সন্ধায় বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) আয়োজিত সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলের ২৯ নতুন বাংলাদেশি নাগরিককে প্রশিক্ষণ সনদ-ভাতা ও চাকরির নিয়োগপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বর্তমানে পোশাক খাতে করপোরেট ট্যাক্স ৩৫ শতাংশ নির্ধারিত আছে। এর আগে এর হার ছিল ১০ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়। তৈরি পোশাক শিল্পমালিকরা এই ট্যাক্স কমিয়ে পুনর্নির্ধারণ (১০ শতাংশ) করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্যাক্স কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যা শিগগির বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইআইপি) আওতায় বিলুপ্ত ছিটমহলের ২৯ জন সনদপ্রাপ্তকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদক বিজয়ী মাহফুজা ও মাবিয়াকে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা ও এক লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যবসায়িক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত বছর রপ্তানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্থিতিশীল। তাই আমাদের অর্জন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জিএসপি সুবিধা খর্ব করা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমাদের পণ্য রপ্তানি ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এবার রপ্তানি ছয় মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘দেশের তৈরি পোশাক খাতে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ দক্ষ শ্রমিকের অভাব রয়েছে। আমাদের বিপুল পরিমাণ মানবসম্পদ রয়েছে। এ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে দক্ষতা বাড়াতে পারলে শ্রমিকের অভাব দূর করা সম্ভব হবে। ২০২১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়নে বিজিএমইএ মানবসম্পদ উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সাল থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এডিবির অর্থায়নে পরিচালিত এসইআইপি প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যেখানে আগামী তিন বছরে পোশাক শিল্পের ৪৩ হাজার ৮০০ জন শ্রমিক ও কারখানার মধ্যম পর্যায়ে দক্ষ জনবল বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণের প্রথম বছরের প্রথম ভাগে রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, বিলুপ্ত ছিটমহলসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দরিদ্র নারী-পুরুষকে পোশাক শিল্পবিষয়ক প্রশিক্ষণের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সহসভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনোয়ারুল করিম, সিইআইপি প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক আবদুল রউফ তালুকদারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।