তুলা আমদানিতে ভারত নির্ভরশীলতা বাড়ছে
তুলা আমদানিতে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা ক্রমশই বাড়ছে। ২০১০ সালে দেশের মোট তুলা আমদানিতে ভারত নির্ভশীলতা ছিল ২২ শতাংশ। ২০১৫ সালের শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৯ শতাংশে, যা মোট আমদানির প্রায় অর্ধেক।
বাংলাদেশ কটন মিল অ্যাসোসিয়েশন ও তুলা আমদানিকারকদের মতে, ভারত থেকে তুলা আমদানি করতে প্রায়ই তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এসব সমস্যা দূর করতে ১২ মার্চ শনিবার সকাল ১০টায় ‘বাংলাদেশ ইন্ডিয়া কটন ফেস্ট ২০১৬’ শুরু হচ্ছে। রাজধানীর রেডিসন হোটেলের ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে এ ফেস্ট উদ্বোধন করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) কনফারেন্স কক্ষে ‘বাংলাদেশ ইন্ডিয়া কটন ফেস্ট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আয়োজকরা। বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশন ও বিটিএমএ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হবে, যাতে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের মধ্যে বিভিন্ন পলিসিসহ ব্যবসায়িক অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।
বিটিএমএ সভাপতি তপন চৌধুরী বলেন, ‘২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট রপ্তানি আয়ের ৮১ শতাংশ আসে টেক্সটাইল ও পোশাক খাত থেকে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির ব্যবধান বেশি হলেও তারা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের বৃহৎ অংশীদার। ভারত থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী আমদানি ছাড়াও স্পিনিং মিলের বিপুল পরিমাণ তুলা আমদানি করা হয়। দেশে মোট তুলার চাহিদার ২২ শতাংশ ২০১০ সালে আমদানি করা হয়। ২০১১ সালে ৩৮ শতাংশ, ২০১২ সালে ২৭ শতাংশ, ২০১৩ সালে ৩৩ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৩৮ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ৪৯ শতাংশ কটন আমদানি হয়েছে।’
তপন চৌধুরী আরো বলেন, ‘ভারত থেকে তুলা আমদানির ক্ষেত্রে প্রায়ই ব্যবসায়ীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এর মধ্যে হঠাৎ করে তুলা রপ্তানি বন্ধ, ক্ষতিপূরণ পেতে বিড়ম্বনা বা ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকারসহ নানা সমস্যা দেখা যায়। ভারতের তুলা রপ্তানিকারকদের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এসব সমস্যা দূর করতে ও সম্পর্ক উন্নয়নেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ ভারতের ওপর এককভাবে তুলা আমদানিনির্ভর হয়ে পড়লে আকস্মিক সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের নেতিবাচক অবস্থা তৈরি হবে কি না, এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বাদশা মিয়া বলেন, ‘আমরা ভারতনির্ভর হলে ঝুঁকি একবারে নেই তা নয়। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় ভারত থেকে তুলা আমদানি সুবিধাজনক হওয়ায় তা বেড়েছে। তবে ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি মাথায় রেখে বিকল্প চিন্তাও করা হচ্ছে। তবে মিলগুলো তাদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দেশ থেকেও তুলা আমদানি করছে। এ ছাড়া এপ্রিলে বিশ্বের অন্য যেসব দেশ থেকে তুলা আমদানি হয় সেসব দেশ নিয়ে আরো একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
প্রথমবারের মতো হতে যাওয়া ‘বাংলাদেশ ইন্ডিয়া কটন ফেস্ট ২০১৬’ সফল করতে বিটিএমএ, এফবিসিসিআই ও আইবিসিসিআই সহযোগিতা করবে বলে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি বাদশা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মেহেদি আলী, সাবেক সভাপতি ও পরিচালক মোহাম্মাদ আইয়ুব উপস্থিত ছিলেন।