ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে, কমবে রপ্তানি
বাংলাদেশ থেকে কার্গো বিমানে করে পণ্য সরাসরি যুক্তরাজ্যে সরবরাহে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এতে রপ্তানিকারক দেশগুলোতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে। সেই সঙ্গে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) নেতারা। ডিসিসিআইয়ের পক্ষে সংগঠনটির মহাসচিব এ এইচ এম রেজাউল কবিরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিমান প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে যুক্তরাজ্যে চারটি ফ্লাইট পরিচালনা করে। প্রতিটি ফ্লাইটে প্রায় ২৫ টন পণ্য পরিবহন করে। এর মধ্যে তৈরি পোশাকসহ ফল-সবজি ও কৃষিজাত পণ্য থাকে।
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যিক সুসম্পর্ক বিদ্যমান। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের পণ্যের বড় বাজার রয়েছে। বাংলাদেশের পণ্যের তৃতীয় আমদানিকারক দেশ তারা। তাই যুক্তরাজ্যের বাজার বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে তিন হাজার ২০ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ওই সময় যুক্তরাজ্য থেকে ৩৩ কোটি সাত লাখ ২০ হাজার ডলারের পণ্য আমদানি হয়।
ঢাকা চেম্বারের মতে, দেশটির আরোপিত এ নিষেধাজ্ঞার ফলে বিদেশে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমনকি বাংলাদেশ যেসব দেশে পণ্য রপ্তানি করে সেসব দেশে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
সংগঠনটি মনে করে, কার্গো পরিবহনের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ওপর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি হিমায়িত মাছসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ডিসিসিআই বলছে, বিভিন্ন কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমুদ্রপথে জাহাজযোগে পণ্য পাঠানো সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকদের নিজস্ব খরচে বিমানে করে পণ্য পাঠাতে হয়। যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের হংকং, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও দুবাই হয়ে পণ্য পাঠাতে হবে। ফলে ব্যবসায় ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি সময়ও বেশি লাগবে। এতে করে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতাও হারাবে।
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদারের জন্য বিমান কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে, তা যুক্তরাজ্য সরকারকে অবহিত করা প্রয়োজন বলে ডিসিসিআই মনে করে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, উদ্ভূত সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে এ নিষেধাজ্ঞা যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এ কার্যক্রম যত দ্রুত গ্রহণ করা হবে, ততই ব্যবসার জন্য মঙ্গলজনক হবে।