অপরিকল্পিত ও নিম্নমানের ভবনে ঝুঁকি বাড়ছে
ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হওয়ার পরেও দেশে দ্রুত অপরিকল্পিত নগরায়ন বাড়ছে। নিম্নমানের ভবন নির্মাণের ফলে ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগে হতাহতের ঝুঁকিও বাড়ছে।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রানা প্লাজা ধসের তৃতীয় বর্ষ স্মরণ ও ভবন নিরাপত্তা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রহমত উল্লাহ মো. দস্তগীর এবং এনডব্লিউসি ও পিডব্লিউডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আজিজুল হক, জাইকা বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রধান প্রতিনিধি মিকিও হাতায়েদা।
সেমিনারে আয়োজকরা বলেন, হিমালয়ের দক্ষিণে বাংলাদেশের অবস্থান, যা বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। বিগত সময়ে প্রায় ১০০ বছর আগে ১৮৯৭ সালে ৮.০ মাত্রার গ্রেট আসাম ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। এতে এ এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
২০১৫ সালের এপ্রিলে সংঘটিত গোরখা ভূমিকম্পে পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালে আট হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। এমনকি এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে থাকা সত্ত্বেও এখানে চারজন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়।
সেমিনারে আলোচকরা বলেন, দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং নিম্নমানের ভবন নির্মাণের ফলে বাংলাদেশে ভূমিকম্পসহ ভবনের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। যেমন ভূমিকম্প ছাড়াই ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধস নিম্নমানের ভবন নির্মাণের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। যেখানে এক হাজার ১৩৫ জন মানুষ মারা যায়। দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ভবন শক্তিশালীকরণ জরুরি। দেশের দুর্যোগ কমাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০১০-১৫তেও বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবায়ন জরুরি।
বক্তারা আরো বলেন, ‘নগর এলাকায় ভবন শক্তিশালী করতে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পমোটিং বিল্ডিং সেফটি ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন ইন দ্য পাবলিক বিল্ডিংস ইন বাংলাদেশ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার ও জাইকার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। যার উদ্দেশ্য ছিল মানবসম্পদ উন্নয়ন, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি ও আইনগত পদ্ধতির উন্নয়ন। এর আওতায় জুন ২০১৬ থেকে ২০১৭ এবং ২০১৭ সালের জুন থেকে জুলাই এবং ২০১৭-২০২০ সাল এ দুটি ধাপে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।’
এর মধ্যে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা (ঢাকা, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা), চট্টগ্রাম ও সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পিডব্লিউডির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ফরহাদ। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের বেসরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।