কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায় ট্যাক্সেস বার
নতুন শিল্প স্থাপনে সহজ শর্তে উদ্যোক্তাদের অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। বিদেশে পাচার রোধে এ টাকা দেশে বিনিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছে ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশন।
আজ সোমবার বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্বাস উদ্দিন এ প্রস্তাব করেন।
আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘মূলধনী বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে এবং সম্পদ ও মূলধন পাচাররোধ করতে সহজ শর্তে নতুন উদ্যোক্তাদের কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। তা করা হলে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। অধিক রাজস্ব আদায়ের জন্য অপ্রদর্শিত আয়কে সহজ শর্তে প্রদর্শনের সুযোগ দিতে হবে। ৫ থেকে ৭ শতাংশ আয়কর দিয়ে যাতে অবৈধ অর্থ বৈধ করা যায় বাজেটে এর বিধান রাখকে হবে।’
আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে আয়কর আইনকে সহজ, আধুনিক, যুগোপযোগী, করবান্ধব ও হয়রানি দূর করে গঠনমূলক করা প্রয়োজন। আয়কর আইনজীবীরা করদাতাদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন। এ কারণে রাজস্বের স্বার্থে করদাতা নিয়োগকৃত আইনজীবী ও এনবিআর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে নিয়মিত মাসিক মতবিনিময় সভা করলে করদাতারা হয়রানিমুক্ত হবেন। সেই সঙ্গে কর আদায়ে গতিশীলতা আসবে বলে মনে করে ঢাকা ট্যাক্সেস বার।’
আব্বাস উদ্দিন আরো বলেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করছি। এ ছাড়া নতুন করদাতা শনাক্ত করে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করে করের আওতা বৃদ্ধি ও করদাতাদের বোঝা লাঘব করতে হবে।’
আব্বাস উদ্দিন বলেন, ‘বর্তমানে পঞ্চাশ লাখ টাকার ওপর টার্নওভার হলে ফার্ম ও কোম্পানিকে দশমিক ৩ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। লোকসান থাকলেও কর দিতে হয়। এটা কালো আইন। তাই এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। বিদ্যমান আয়কর আইনে সর্বনিম্ন জরিমানার বিধান ৫০ শতাংশ বা ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা কমানো উচিত। এটা ন্যায্য নয়।’
আলোচনা সভায় ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন বলেন, ‘আয়কর আইনজীবীদের ক্ষেত্রে বৈধদের চেয়ে অবৈধ প্রতিনিধির সংখ্যা অনেক বেশি। আয়কর মামলা যারা পরিচালনা করছে তাদের সনদ নেই। অফিসের পিয়নও মামলা পরিচালনা করে। আয়কর মামলার প্রায় ৫০ শতাংশ মামলাই অবৈধ আইনজীবীরা পরিচালনা করছে। এটা বন্ধ করতে হবে।’
ট্যাক্সেস বারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গোলাম সরোয়ার বলেন, ‘আয়কর ট্রাইবুন্যাল এখন অনেক দূর এগিয়েছে। ১৯৪৩ সালে উপমহাদেশে এই ট্রাইব্যুনাল যাত্রা শুরু করে।’ বাংলাদেশের এই ট্রাইব্যুনালকে আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
প্রাক-বাজেট আলোচনার সভাপতিত্ব করেন এনবিআরের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। এ সময় আয়কর, মূসক, শুল্ক বিভাগের সদস্য ও ঢাকা ট্যাক্সেস বারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।