ইউরোপে যাবে বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের পোশাক
বাংলাদেশের তৈরি বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে পোশাক ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে বিপণন হচ্ছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হলেও এত দিনে বাংলাদেশি নিজস্ব কোনো ব্র্যান্ড গড়ে ওঠেনি। তবে প্রথমবারের মতো একদল প্রবাসী ব্যবসায়ী ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের নিজস্ব ব্র্যান্ডে পোশাক বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নিয়েছেন।
বাংলাদেশি ব্র্যান্ড বিপণনে ইউরোপে বাংলাদেশ বিজনেস কনসাল্টিং (বিবিসি) নামে একটি সংগঠন গঠন করা হয়েছে। জারা, এইচঅ্যান্ডএম, জেসিপেনিসহ ব্র্যান্ডসহ নিত্যনতুন ফ্যাশনকে ধারণ করে আধুনিক প্রযুক্তি ও পোশাকের নিজস্ব মডেলিং, মার্কেটিং, ব্র্যান্ডিংয়ের সমন্বয়ে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের পোশাককে তুলে ধরতে চান উদ্যোক্তারা।
এ প্রসঙ্গে বিবিসির সমন্বয়ক কাজী এনায়েত উল্লাহ ইনু বাসসকে বলেন, ‘আমাদের হাত ছুঁয়ে বিশ্বব্যাপী এত পোশাক যাচ্ছে। অথচ আমাদের কোনো নাম নেই। ক্রেতারা সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে পোশাক তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। মনে করেন, হংকং অফিস থেকে পোশাকের ডিজাইন গেল, কোরিয়া থেকে গেল কাপড়। তাদের তদারকিতেই করা হলো ব্র্যান্ডিং বা বিপণন। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলেই বোঝা যায়, এসব প্রক্রিয়ার কারণে লাভের সিংহভাগ চলে যায় বিদেশি ক্রেতাদের পকেটে।’
কাজী এনায়েত বলেন, ‘যাঁরা পোশাক ব্র্যান্ডিং বা বিপণন প্রক্রিয়ায় যুক্ত, আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁদের সহায়তা নিয়েই যাত্রা শুরু করতে পারি। ইউরোপের নিত্যনতুন ফ্যাশনকে ধারণ করে আধুনিক প্রযুক্তি আর পোশাকের নিজস্ব মডেল, মার্কেটিং, ব্র্যান্ডিংয়ের সমন্বয়ে পোশাক তৈরি করে বিশ্ববাসীকে চমকে দিতে পারি। আর এতে নতুন ব্র্যান্ডের পরিচয়ে পরিচিত হবে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে এতে যে মুনাফা হবে তার একটি অংশ যদি আমরা পোশাক শ্রমিকদের দিতে পারি, তাহলে শ্রমিকদের উৎসাহ বাড়বে। বিদেশি ব্র্যান্ডের প্রতিযোগীদের সঙ্গে টেক্কা দিতে পারবে দেশি ব্র্যান্ডের পোশাক।’
পদ্মা, মেঘনা অথবা যমুনার যেকোনো একটির নামে বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের নাম দেওয়া হবে। শিগগিরই বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের নিজস্ব নাম চূড়ান্ত করা হবে বলে কাজী এনায়েত জানান।
ফ্রান্সপ্রবাসী ব্যবসায়ী কাজী এনায়েত বলেন, ‘ইউরোপীয়দের দিয়েই তাদের পছন্দের ডিজাইন তৈরি করা হবে। বাজারজাতকরণ ও অফিস ব্যবস্থাপনায়ও রাখা হবে তাদের, যাতে বড় বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারি।’
ইউরোপের বাজারে কীভাবে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড চালু করা যায়, এ নিয়ে সম্প্রতি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিবিসি নেতারা।
প্রবাসী ব্যবসায়ীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বাসসকে বলেন, ‘অতীতে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল, তা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রপ্তানিও বাড়ছে। এই উদ্যোগ ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচিত করবে। এর মাধ্যমে শুধু পোশাক তৈরিতে নয়, নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরিতেও বাংলাদেশ আলাদা পরিচিতি পাবে।’