বাজারে নিত্যপণ্যের দাম চড়া, অস্বস্তিতে ক্রেতা
প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম নিয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। এ নিয়ে ক্রেতাসাধারণের ক্ষোভ ও অভিযোগ থাকলেও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরছে না। এ অবস্থায় ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ। ফলে, বাজারদর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ ক্রেতারা।
আজ শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচা মরিচ, আদা, পেঁয়াজ, আলু, ভোজ্যতেল, চিনি, সবজিসহ বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম এখনও ঊর্ধ্বমুখী। এসব পণ্যের দাম কিছুতেই সাধারণ মানুষের নাগালে আসছে না। প্রতিদিন বাজারে গিয়ে অস্বস্তি নিয়ে ঘরে ফিরছেন নিম্নবিত্তরা।
আজ বাজারে প্রতিকেজি ভালো মানের আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়। ঈদের আগে একই আলুর দাম ছিল প্রতিকেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। বর্তমানে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। পাশাপাশি গেল সপ্তাহে কালো গোলবেগুনের দামও ছিল বাড়তি। এ সপ্তাহে ভালো মানের কালো গোলবেগুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, ঈদের আগে যা ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। দুদিন আগেও যে কাঁচা মরিচের দাম ছিল ২৪০ টাকা কেজি, আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনকে ঘিরে কেজিপ্রতি মরিচের দাম বেড়েছে ৮০ টাকা।
এদিকে, গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা ও খোলা পাম তেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা কমানোর ঘোষণা আসে, যা পরের দিন বুধবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু, বাজারে এখনও ভোজ্যতেলের দাম কমেনি। আগের বাড়তি দামেই তেল কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখনও নতুন দামের তেল বাজারে আসেনি। কোম্পানি আরও কদিন পর সেগুলো বাজারে ছাড়বে। এখনও পুরোনো তেল বিক্রি করছি, যে কারণে আগের দাম রাখতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে খুচরা বাজারে কোথাও মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। গত কয়েকদিনের ব্যবধানে এ পণ্যটির দাম আরও বেড়ে এখন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার ১৫০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হচ্ছে। প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আদার দাম ৩০০ টাকা কেজির নিচে নামছে না। এ ছাড়া বাজারে গত রমজানের ঈদের পর থেকেই টমেটোর দাম ২০০ টাকা কেজির নিচে নামেনি। এখন বিভিন্ন বাজারে এ কাঁচা পণ্যটি কেজিপ্রতি ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা মামুন হোসেন বলেন, ‘গেল দুদিন ঢাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। বিভিন্ন জেলা থেকে সবজির গাড়ি কম এসেছে। এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। আমরা পাইকারি বাজার থেকে যে দামে কিনি, সেই অনুযায়ী বিক্রি করি। বেশি লাভ করি না।’
কারওয়ান বাজারে আসা ক্রেতা ফরিদুর রহমান বলেন, ‘সব পণ্যের দামই আমাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। সংসার চালাতে আমাদের মতো মানুষের খুবই কষ্ট হচ্ছে। অনেক দিন ধরে আদা, পেঁয়াজ, চিনি, কাঁচা মরিচ, আদা, ভোজ্যতেলসহ প্রায় সবকিছুর দামই বাড়ছে। কিন্তু, এখনও দাম কমেনি। সাড়ে ৩০০ টাকা দিয়ে কাঁচা মরিচ খাওয়া আমাদের জন্য কষ্টকর। বাজারে গেলেই রাগ ওঠে, কিন্তু আমার রাগ দেখারও কেউ নেই।’
বাজারে কিছুটা কমেছে মাছের দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন জাতের মাছের দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। অন্যদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম ২০০ টাকার ওপরেই আটকে আছে। ব্রয়লার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। সোনালি মুরগির কেজি ২৮০ থেকে ৩৩০ টাকা। আর প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।