আলো ঝলমল প্যাভিলিয়ন, ফার্নিচারে বিশেষ ছাড়!
রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজন করা হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। মেলা সেজেছে নান্দনিক সাজে। রাতে প্যাভিলিয়নগুলোর আলোকসজ্জা হয়ে ওঠে যেন আরও মায়াবী। ক্রেতাদের আর্কষণের প্রায় সব চেষ্টায়ই করেছে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই ফার্নিচারের প্যাভিলিয়ন। সেখানে রাখা হয়েছে মূল্যে বিশেষ ছাড়। শুরুর ষষ্ঠ দিন আজ শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দেখা গেছে এমন দৃশ্য।
প্রথম ছুটির দিনে আজ বিকেল থেকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে এই মেলা। বেচাবিক্রিও হয়েছে অন্য দিনগুলোর থেকে বেশি। যদিও এই একদিনের অর্ধবেলার বিক্রির বিবেচনায় মেলা জমে উঠেছে বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে, আজ শীত যতটুকু কমেছে, তা অব্যাহত থাকলে ক্রেতাদের সমাগম বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।
বিভিন্ন ফার্নিচার প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা যায়, সুদৃশ্য বিভিন্ন ডিজাইনের ফার্নিচার প্যাভিলিয়নে বেলা ১২টায় দর্শনার্থীদের আনাগোনা খুবই কম ছিল। এ সময় বেশিরভাগ ফার্নিচার প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মীদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে পাল্টে যায় চিত্র। জুমার নামাজের পর বিকেল ৩টার দিকে দর্শনার্থীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। বিকেল ৫টায় ফার্নিচার প্যাভিলিয়নগুলোতে ভিড় ছিল উল্লেখযোগ্য। আগ্রহ নিয়ে অনেকেই পছন্দের ফার্নিচার দেখছিলেন। অনেকে কোন কোন ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানে কত ছাড় দিচ্ছে, তার খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন।
এবারের মেলায় সব পণ্যে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে হাতিম ফার্নিচার। অন্যদিক, জেএমজি ফার্নিচার ও ব্রাদাস ফার্নিচার দিচ্ছে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়। ক্রেতারা বলছেন, ঘর সাজাতে ফার্নিচার জরুরি। আবার মেলার নিত্যনতুন ডিজাইনের ফার্নিচার পাওয়া যায়। তা ছাড়া মেলায় সব প্রতিষ্ঠানের পণ্য দেখা ও যাচাইয়ের সুযোগ থাকে, সঙ্গে থাকে বিশেষ ছাড়। যে কারণে মেলা ঘুরে পছন্দ করছেন আসবাবপত্র।
কথা হয় ব্যাংক কর্মকর্তা আবিদা রহমানের সঙ্গে। তিনি শ্যামলী থেকে এসেছেন। এনটিভি অনলাইনকে আবিদা বলেন, আমি মেলায় এসে অনেকক্ষণ পারটেক্স ফার্নিচার প্যাভিলিয়ন খুঁজেছি। পরে জানতে পারি, এবারে মেলায় তাদের প্যাভিলিয়ন নেই। শুনছি অটবিও নেই। পরে অন্যান্য ফার্নিচার প্যাভিলিয়ন দেখলাম। প্রায় সব প্যাভিলিয়নে নতুন ডিজাইনের ফার্নিচার দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন ফার্নিচারে দামেও রয়েছে ছাড়। পছন্দসই একটি কিনবেন বলে জানান আবিদা। তবে, সেটি যে আজই, তা বলতে পারেননি তিনি।
কথা হয় স্কুল শিক্ষক হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে। এসেছেন বাড্ডা থেকে। তিনি বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন। তাই পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছি। এবারে ফার্নিচারগুলোতে ছাড় রয়েছে। তারপরও দাম বেশি মনে হচ্ছে।
হাতিল ফার্নিচারের সব পণ্যে পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। মেলা চলাকালীন পণ্য কিনলে ক্রেতারা এই ছাড় পাবেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, মেলা উপলক্ষে নতুন নতুন ডিজাইনের ফার্নিচার আনা হয়েছে। আমাদের ফার্নিচারে সব সময় ভেরিয়েশন থাকে। এ কারণে মানুষের আগ্রহ বেশি। এখন পর্যন্ত বিক্রয় তেমন না হলেও অনেক ক্রেতা আসছেন ও দেখছেন। তিনি আরও বলেন, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এবারে মানুষের আনাগোনা আজ বেশি।
ডেল্টা ফার্নিচারে চলছে ১০ শতাংশ ছাড় জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় কর্মকর্তা মো. তাসরিফ বিল্লাহ। তিনি বলেন, মেলার শুরু থেকে আজ নামাজের আগ পর্ষন্ত মানুষ কম ছিল। তবে আজ দুপুর থেকে ক্রেতাদের আনাগোন খুব বেড়েছে। আমাদের ব্যস্ততাও বেড়েছে। ক্রেতারা আসছেন, তাদের পছন্দ মতো ফার্নিচার দেখছেন। কেউ অর্ডার দিচ্ছেন, আবার অনেকে ঘুরে দেখছেন, পরে কিনবেন।
ব্রাদাস ফার্নিচারের বিক্রয় কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, মেলা শুরু হয়েছে গত রোববার থেকে। এতোদিন ক্রেতা কম থাকলেও আজ বেশি। বিকেলে পর ক্রেতাদের চাপ পড়েছে। আমরা ক্রেতাদের ফার্নিচারের দেখাচ্ছি। তারা দেখছেন, অনেকে অর্ডার দিচ্ছেন।