নিয়মিত করদাতাদের হয়রানি বাড়বে, মত বিশ্লেষকদের
যারা নিয়মিত কর দিচ্ছেন প্রস্তাবিত বাজেটে তাদেরই হয়রানি বাড়বে। আর যারা কর ফাঁকি দিচ্ছেন, তারা বরাবরের মতো ঘুষ দিয়ে করের বাইরে থেকে যাবেন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এমনটাই বলেছেন অর্থনীতিবিদরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নাজুক অর্থনীতির বাস্তবতায় বাজেটে ঘুরে দাঁড়ানোর মুন্সিয়ানা নেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতিও এ বাজেটে উপেক্ষিত। আর বাজেটে মোট ঘাটতির এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নেবে সরকার, যা মোট বাজেটের ১৭ শতাংশের বেশি।
অন্যদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে মোট চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের ভার পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাঁধে। এর মধ্যে ৩৮ দশমিক ১ শতাংশ আসবে কর বা ভ্যাট থেকে, আয়কর থেকে ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এ ছাড়া সম্পূরক শুল্ক থেকে ১৩ দশমিক ৪ এবং আমদানি শুল্ক থেকে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ আয় হবে সরকারের। অভ্যন্তরীণ খাত থেকে এসব আয়ের জন্য পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লষকরা। তারা বলেন, ঘাটতি মেটাতে যেমন ঋণের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে, তেমনি বাড়াতে হবে করের আওতা। তা না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বেসরকারি খাত।
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সরকার ব্যাংক থেকে এত পরিমাণ ঋণ নিলে তাদের কাছে ব্যক্তি খাতে দেওয়ার মতো তেমন কোনো টাকা থাকবে না। ফলে ব্যক্তি খাতে যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা আদায় হবে না।’
জিরো টলারেন্সের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সরকারের নীতি পরিপন্থি বলে মনে করছেন আরেক অর্থনীতিবিদ ড. এম ইউসুফ। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে নির্বাচনি ইশতেহার এবং বাজেটে যে জিরো টলারেন্সের কথা বলা হয়েছে, সেখানে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করে ফেলতে পারবে। তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। এটা তো হতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ আমাদের নীতির পরিপন্থি।’
দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট। তাই অপ্রয়োজনীয় সরকারি খরচ কমিয়ে সামাজিক সুরক্ষাসহ মৌলিক খাতগুলোতে বরাদ্দ বাড়ানোরও তাগিদ দেন বিশ্লষকরা।