কালো টাকা সাদা করার নিয়ম সংবিধান পরিপন্থি : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার যে নিয়ম রাখা হয়েছে, তা সংবিধান পরিপন্থি জানিয়ে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সুরক্ষা, স্থিতিশীলতা ও সংস্কারের বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
আজ সোমবার (১০ জুন) দুপুরে রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে আয়োজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ ও বিরাজমান পরিস্থিতি : অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের প্রাপ্তি’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। এতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রস্তাবিত বাজেটে আমরা কোথাও কোনো স্বস্তি দেখি না মন্তব্য করে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বিভিন্ন খাতে দেখা গেছে প্রস্তাবিত বাজেটে সুরক্ষার বিষয়ে আশ্বস্ত হওয়ার কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। বাজেটে আসক্ত হওয়ার মতো কিছু পাওয়া যায়নি জানিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাজেটে জ্বালানি খাত, ব্যাংক খাত, পুঁজিবাজারসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে রাজনৈতিক অঙ্গীকার দেখা যায়নি। প্রস্তাবিত বাজেটে সুরক্ষা, স্থিতিশীলতা ও সংস্কারের বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
বর্তমান সরকারের ঘোষিত নীতির সঙ্গে বাজেটে অন্তত পাঁচটি ক্ষেত্রে বড় ধরনের ব্যত্যয় হয়েছে জানিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ৭ জানুয়ারিতে যে নির্বাচন প্রক্রিয়া হয়েছে, সেখানে বর্তমান সরকার যে ইশতেহার দিয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে তারা ইশতিহারের প্রতি বিশ্বস্ত থাকেনি। প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচনি ইশতিহারের বড় ধরনের বরখেলাপ হয়েছে। বর্তমান সরকারের যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা আছে তার সঙ্গে কিন্তু বর্তমান প্রস্তাবিত বাজেটের কৌশল ও বরাদ্দের মিল নেই।
অনুষ্ঠানে তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, গার্মেন্টস, জ্বালানি, মাইক্রোক্রেডিটের মতো প্রত্যক্ষ কর ছাড়ের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নাই, আগামীতে কী করা হবে এই বিষয়ে দিক নির্দেশনা নাই। আয়কর ছাড়ের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপও নেই।
কালো টাকা সাদা করার বিষয়টি নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে জানিয়ে তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ১৫ শতাংশ নগদ অর্থ দিয়ে অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করা যাবে। কিন্তু গুলশান এলাকায় ফ্ল্যাট কিনলে ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ কর দিয়ে আপনি বের হয়ে যেতে পারবেন। পুরো বৈধ হবে, একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে ১৫ শতাংশ নয় ২ থেকে ৩ শতাংশ দিয়ে আপনি বের হয়ে যেতে পারবেন। একই সঙ্গে সম্পূর্ণ রূপে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। কাউকে কেউ কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না। এটা মানা যায় না।
বাজেটে বড় আকারে আমরা ঋণের পরিস্থিতিতে পড়েছি সেটা স্বীকার করা হয়নি জানিয়ে তৌফিকুল ইসলাম বলেন, গত অর্থবছরে বিদেশি ঋণশোধ করার জন্য আমাদের রাজস্ব যথেষ্ট ছিল না। আমরা প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ করে পরিশোধ করেছি।