ইসলামী ব্যাংকে ২০১৭ সালের পর নিয়োগ পাওয়া কেউ থাকবেন না, বলেছেন সিবিএ নেতা
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ঢাকার দিলকুশায় ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু কর্নার ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা। মারধরের স্বীকার হয়েছেন মানবসম্পদ বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা।
এ ঘটনার পর ব্যাংকের সিবিএ নেতা আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের পরে যত নির্বাহী এসেছেন, তারা আর ব্যাংকে ঢুকতে পারবেন না। বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনারা শান্ত হোন। যে ইসলামী ব্যাংক দখল হয়েছে, তা আবার ফিরে আসবে। এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) মহোদয় আমাকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন।
আনিসুর রহমান বলেন, ২০১৭ সালের পর থেকে পরীক্ষা ছাড়া অনিয়মের মাধ্যমে যেসব নিয়োগ হয়েছে, সেসব নিয়োগ বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে ওই সময়ের পরে যাঁদের চাকরি অবৈধভাবে বাতিল করা হয়েছে, তাদের চাকরি পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া গত সাত বছরে যারা পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের যথাযথভাবে পদোন্নতি দেওয়া হবে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে ব্যাংকটির মালিকানা পরিবর্তনের পর গত সাত বছরে অনেক কর্মকর্তাকে জোরপূর্বক চাকরি ছাড়তে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে। আবার অনেক জুনিয়র কর্মকর্তাকে সিনিয়র পদে বসানো হয়। এ ছাড়া ব্যাংকটি থেকে বড় অঙ্কের অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে বলে মালিকদের একটি পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে জানা গেছে, শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আজ সকালে ব্যাংকে এসে কিছু কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু কর্নার ভাঙচুর করেন। এরপর কর্মকর্তাদের অনেকে অন্য কর্মকর্তাদের খুঁজতে থাকেন, যারা মালিকপক্ষের অবৈধ নির্দেশে সাবেক কিছু কর্মীকে ব্যাংক ছাড়তে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
যেসব কর্মকর্তা ইসলামী ব্যাংক থেকে মালিকপক্ষের অভিপ্রায় অনুযায়ী টাকা বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, বিক্ষুব্ধ ওই কর্মকর্তারা তাঁদেরও খুঁজতে থাকেন। এ সময় তারা মানবসম্পন্ন বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তাকে মারধর করেন। পাশাপাশি ব্যাংক এলাকায় নানা রকম স্লোগানও দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ইসলামী ব্যাংকের অপারেশন বিভাগের প্রধান এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালউদ্দিন জসিম। তিনি কর্মকর্তাদের বলেন, তার সঙ্গে ব্যাংকের এমডির কথা হয়েছে। ব্যাংকে অনিয়মের মাধ্যমে যেসব নিয়োগ হয়েছে, তা বাতিলের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ইসলামী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়।