ঢাবিতে বাজেটের আকার বাড়লেও বঞ্চিত শিক্ষা ও গবেষণা খাত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছরের বাজেট ধরা হয়েছে ৭৪১ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
বাজেটে আয়ের উৎস হিসেবে দেখানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুদান ও নিজস্ব আয়। এর মধ্যে ইউজিসি দেবে ৬২৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। নিজস্ব আয় বাবদ ধরা হয়েছে ৭১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে ঘাটতি বাজেট দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
আজ বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে এই বাজেট উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন।
তবে, এত বড় বাজেটের একটা বড় অংশই রাখা হয়েছে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও পেনশনের জন্য। আর বাকি আনুষঙ্গিক বিষয় শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও শিক্ষা খাতের উন্নয়নে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৩৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
এবার, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৩২ কোটি ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা মোট বাজেটের ৫৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। এর মধ্যে পেনশনের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া, পরীক্ষা সংক্রান্ত ব্যয় ৬৮ কোটি ৪২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও অন্যান্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৯ কোটি ৭৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে, মেরামত ও সংরক্ষণ খাতে ২৯ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
বাজেট আলোচনায় শিক্ষা ও গবেষণা খাতে কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সিনেট সদস্য এম এ বারী। তিনি বলেন, ‘শিক্ষা ও গবেষণা খাতে কম বরাদ্দ দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়বে না। আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে আরো পিছিয়ে যাবে।’ তাই এই খাতে বরাদ্দ আরো বাড়াতে তিনি পরামর্শ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রস্তাবিত বাজেট পেশ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ- উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কবি মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরীন আআহমাদ, রেজিস্ট্রার এনামুজ্জামান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম এম গোলাম রব্বানীসহ সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ।
২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। পরে সংশোধিত বাজেটে আকার বেড়ে দাঁড়ায় ৭৩৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা। সে হিসাবে এ বছর বাজেটের আকার বেড়েছে দুই কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এর আগে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৬৬৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। পরে সংশোধিত আকারে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছর তা ছিল ৪২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছিল ৩১৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
নতুন বাজেটকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সিনেট সদস্যারা। তবে র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে না যাওয়ায় সমালোচনা করেছেন তাঁরা।
বাজেট পরবর্তী আলোচনায় ডাকসু নির্বাচনের কথাও তুলে ধরেন সিনেট সদস্যরা। তারা ডাকসু নির্বাচন দিয়ে সিনেট প্যানেল পূর্ণ করার আহ্বান জানান। সিনেট সদস্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত দ্রুতই ডাকসু নির্বাচন দিয়ে সিনেট প্যানেল পূর্ণ করা। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য হল নির্মাণ, পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস করার মাধ্যমে শতবর্ষ উপলক্ষে সব সমস্যা সমাধান করার পরামর্শ দেন তিনি।