পাওনা টাকা চাওয়ায় ঢাবির ক্যান্টিন ম্যানেজারকে জুতাপেটা
রুমে খাবার পাঠাতে দেরি হওয়ায় এবং পাওনা টাকা চাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিন ম্যানেজার জুয়েল মিয়াকে মারধর ও জুতাপেটা করেছেন শফিক ফকির নামের এক ছাত্রলীগ নেতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে হলের ক্যান্টিনে এই ঘটনা ঘটে। শফিক ফকির বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও পদ্মা ১০০০২ নম্বর রুমে থাকেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ক্যান্টিন ম্যানেজার জুয়েল মিয়াকে ফোন দিয়ে রুমে খাবার পাঠাতে বলেন শফিক ফকির। ক্যান্টিনে ভিড় থাকায় খাবার পাঠাতে ১০ মিনিট দেরি হয়। এর মধ্যে দুজন জুনিয়রকে ক্যান্টিনে পাঠিয়ে ফোন ধরিয়ে দিতে বলেন শফিক। ফোন ধরিয়ে দিলে জুয়েলকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। এ সময় বাকি টাকা চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে যান শফিক। এখনি ক্যান্টিনে এসে ম্যানেজারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শফিক ক্যান্টিনে গিয়ে ম্যানেজার জুয়েলকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। পরে তাঁর বসার স্থান থেকে বেরিয়ে আসতে বলেন। ব্যবস্থাপক গালাগালি না করতে অনুরোধ করলে শফিক আরো ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে কলার ধরে টেনে বের করে নিয়ে আসেন। প্রথমে তাঁকে হাত দিয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে জুতা দিয়ে পেটান শফিক।
এ বিষয়ে ক্যান্টিন ম্যানেজার জুয়েল মিয়া বলেন, রমজানের আগে থেকেই ক্যান্টিনে বাকি খান শফিক। রোজার মধ্যেই এক হাজার ২০০ টাকা বাকি হয়। রোজা পেরিয়ে গেলেও টাকা দেননি শফিক। এ ছাড়া প্রায়ই তাঁর রুমে খাবার পাঠাতে হয়। বর্তমানে তাঁর কাছে পাওনা টাকার পরিমাণ দেড় হাজার টাকার বেশি হবে।
জুয়েল মিয়া বলেন, আজকে রুমে খাবার পাঠাতে একটু দেরি হওয়ায় শফিক লোক পাঠান ক্যান্টিনে। ক্যান্টিনে এসে তারা আমাকে ফোনে শফিকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। আমি ফোন নিয়ে কথা শুরু করলে তিনি খাবার দেরিতে পাঠানোর জন্য কৈফিয়ত চান। এ সময় আমি খাবার পাঠিয়ে দিয়েছি বলে তাঁর কাছে পাওনা কিছু টাকা চেয়েছি। তিনি টাকা চাওয়ার কথা শুনে ফোনেই গালাগালি করে পরে ক্যান্টিনে আসেন। এসে ক্যান্টিনের বাইরে এনে জুতা দিয়ে মুখে, মাথায় মারধর করেন।
এ বিষয়ে জানতে শফিক ফকিরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি এখনো অবহিত না। শফিক ফকিরকে ক্যান্টিন ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তাঁর পাওনা টাকা পরিশোধ করতে হবে। আমার সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে (সাদ্দাম হোসেন) কথা বলে তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই বিষয়ে বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা বিষয়টি শুনেছি। কেন তাঁর বিরুদ্ধে তিন দিনের মধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এই মর্মে তাঁকে (শফিক) জবাব দিতে বলা হয়েছে।’