আনন্দে ভাসল সিরাজগঞ্জের শিক্ষার্থীরা
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/10/28/photo-1540728704.jpg)
খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সলঙ্গা ইসলামিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আজ রোববার জেলার মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়েছে।
জেলার ৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত এক হাজার ৬২৭ ছাত্রছাত্রীকে সম্মাননা সনদ এবং অষ্টম ও দশম শ্রেণীর ৩৫১ মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ প্রদান করা হয়।
উৎসবমুখর এ অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ হাজারেরও বেশি ছাত্রছাত্রীসহ, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক, আমন্ত্রিত অতিথি ও সমাজের বিভিন্নস্তরের পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খাজা টিপু সুলতান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা। অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী মাহবুব, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফী উল্লাহ, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. রায়হান গফুর, সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেড. জেড. এম তাজুল হুদা ও সলঙ্গা ইসলামিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাজা টিপু সুলতান বলেন, ‘২০০১ সালে বিশেষ উদ্দেশে দুটি স্কুল নিয়ে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়। যা আজ ৯৭টি স্কুলে প্রসার ঘটেছে। সেই বিশেষ উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানো। তবে বলতে চাই, শুধু লেখাপড়া করলে আমার তৃপ্তি হচ্ছে না। তাই শিক্ষায় উন্নতির পাশাপাশি আমি আজকে তোমাদের থেকে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চাইব। আর তা হলো আত্মশুদ্ধি। আসো লেখাপড়ার পাশাপাশি আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করি।’
খাজা টিপু সুলতান বলেন, ‘তোমাদের আহ্বান করব সব খারাপ কাজকে বর্জন এবং সব ভালো কাজকে গ্রহণ করার জন্য। আর সেটা সম্ভব শিক্ষাগ্রহণ ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে। যদি তোমরা এই চর্চা করতে পার, হয়তো তোমাদের ভেতর থেকেই কেউ না কেউ জাতি গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।’
খাজা টিপু সুলতান বলেন, ‘আমরা মিথ্যা বলব না, এমন কিছু করব না— যা ধর্মে নিষেধ, যা রাষ্ট্রের আইন পরিপন্থী, যা সামাজিক অবক্ষয় ডেকে আনে এবং যা পরিবারের সদস্যদের কষ্ট দেয়। আমি বিশ্বাস করি তোমরাই সারা দেশের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে। তোমরা যারা আজ এখানে উপস্থিত, তারা সিরাজগঞ্জের ক্রিম। হয়তো তোমরাই কোনো একদিন দেশের শাসনভার গ্রহণ করবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার না দিয়ে অন্যের বৈধ স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেব। এই ব্রত নিয়ে চললে এবং ওলিদের পথে চললে, তাদের কথা শুনলে আমরা আমাদের অভিষ্ট্য লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব।’
খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খাজা টিপু সুলতান মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বৃত্তির নগদ অর্থ ও সম্মাননা সনদ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী এবং ফাউন্ডেশনের প্রচার ও জনসংযোগপ্রধান প্রকৌশলী খুরশীদ আহম্মদ।
মেধাভিত্তিক খেলার অনুষ্ঠান ‘মেধায় মাতি’ পর্বটি ছিল অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ। পর্বটি পরিচালনা করেন ফাউন্ডেশনের বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী আরমান খান। দেশের খ্যাতনামা সংগীতশিল্পী শুভ্রদেবের সুরের মূর্ছনায় এবং অভিনেতা মীর সাব্বিরের উপস্থিতি ছাত্রছাত্রীদের আনন্দে মাতিয়ে রাখে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ সোহেল হোসেন ইবনে বতুতা, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আলী, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী আরমান খান, বৃহত্তর ঢাকা অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী মেজবাউল আলম রিপন, প্রচার মিশনপ্রধান অধ্যাপক গিয়াস উদ্দীন ও উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্যরা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ফাউন্ডেশনের বৃহত্তর উত্তর অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী আনসার আলী খান জয়।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অলাভজনক,মানবকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান খাজা মোজাম্মেল হক (র.) ফাউন্ডেশন দুটি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে বছরব্যাপী বিনামূল্যে চিকিৎসাপত্র প্রদান, সিরাজগঞ্জ জেলার উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও সম্মাননা সনদ প্রদান এবং শুধু খাজা শাহ্ ইউনুছ আলী এনায়েতপুরী (র.)-এর নেছবতভুক্ত অসচ্ছল কর্মক্ষম ভক্তবৃন্দের মধ্যে ‘ছাদকা-ই-জারিয়া’ হিসেবে এককালীন মূলধন প্রদান করে আসছে।