রাবি ছাত্রলীগনেত্রীর কক্ষ সিলগালা
নিয়ম-নীতি অমান্য করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের এক ছাত্রলীগনেত্রীর কক্ষ সিলগালা করেছে হল প্রশাসন। গতকাল সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই রুম সিলগালা করা হয় বলে জানান হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মণি কৃষ্ণ মোহন্ত।
আবাসিক শিক্ষক জানান, হলের কোনো নিয়ম-নীতি মানতেন না ছাত্রলীগের ওই নেত্রী। হলের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক প্রভাব দেখান তিনি। বিষয়গুলো নিয়ে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাঁর কক্ষটি সিলগালা করা হয়।
ছাত্রলীগনেত্রীর নাম নাশরাত আর্শিয়ানা ঐশী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ২৮৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্রী। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাবি ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হল সূত্রে জানা যায়, দুই আসনের একটি কক্ষে একাই থাকতেন ছাত্রলীগনেত্রী ঐশী। হল প্রশাসন এর আগে এ বিষয়ে কয়েকবার তাঁকে অবগত করে। গতকাল এসব বিষয় নিয়ে হল প্রশাসন ও ঐশীর মধ্যে ঝামেলা হয়। ঝামেলার একপর্যায়ে হল প্রশাসন তাঁর কক্ষ সিলগালা করে দেয়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগনেত্রী ঐশী বলেন, এখানে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। প্রথমে হলের প্রাধ্যক্ষ রাগান্বিত হয়ে এ কাজ করেছিলেন। তারপর আমাদের বড় ভাইরা প্রাধ্যক্ষ ও উপাচার্য স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করেছেন।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল ছাত্রলীগের সভাপতি তাজরিন মেধা বলেন, ‘আমাদের হলে কোনো সিঙ্গেল কক্ষ নেই। ঐশী তার কক্ষে একা থাকে। ওই কক্ষে অন্য কাউকে সিট বরাদ্দ দিলে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। বিষয়টি নিয়ে প্রাধ্যক্ষ ম্যাম একাধিকবার তার সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু সে ডাবল সিটের কক্ষে একা থাকতে চায়। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তার কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।’
রুম সিলগালার বিষয়ে আবাসিক শিক্ষক ড. মণি কৃষ্ণ মোহন্ত বলেন, হলের ২৮৮ নম্বর কক্ষটি ডাবল সিটের। কিন্তু শুরু থেকে ঐশী ওই কক্ষে একা থাকে। তার কক্ষে কাউকে সিট বরাদ্দ দেওয়া হলে সে উঠতে দেয় না। বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন থেকে মাস খানেক আগে চিঠি ইস্যু করা হয়। সে চিঠির কোনো জবাব দেয়নি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে তার কক্ষটি সিলগালা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফারজানা কাইয়ুম কেয়া বলেন, ‘এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারব না। উপাচার্য বিদেশ থেকে ফিরলে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে জানাব।’