হলেই থাকতে চান কোটা সংস্কারপন্থিরা, উৎকণ্ঠা নিয়ে ছাড়ছেন কেউ কেউ
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলছে পাল্টাপাল্টি হামলা। কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন কোটা সংস্কারপন্থিরা। হামলার মুখে পড়েন ছাত্রলীগের। যদিও তা অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা। এরইমধ্যে গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এই সংঘাত-সংঘর্ষে ঘটেছে হতাহাতের ঘটনা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করা হয়েছে। আর আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে যেতে বলা হয়। যদিও ক্যাম্পাস এখনও থমথমে। বিকেল পর্যন্ত চলেছে সেখানে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এমন এক মুহূর্তে উৎকণ্ঠা নিয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে হল ছাড়া শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যদিও কেউ কেউ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত থাকতে চান সেখানেই।
যদিও গতকাল রাত থেকে হল থেকে অনেককে বের করে দেওয়ার দাবি করা হয়। বলা হয়, তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আবার অনেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা গতকাল হলে থাকেননি বলে জানা গেছে। কোথাও কোথাও ছাত্রলীগনেতাদের রুম থেকে অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করেছেন। আবার কোথাও কোথাও মিলেছে মদের বোতল। কেউ কেউ আবার সকালে তাদের ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যান। তবে, কথা বলতে রাজি হননি কেউ। আর সন্ধ্যার দিক দিয়ে রোকেয়া হল, সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, বিজয় একাত্তর থেকে বেশ কয়েকজনকে জিনিসপত্র নিয়ে বের হতে দেখা যায়। এ সময় তাদের চোখেমুখে ছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
আন্দোলনরতরা হল খালি করার নির্দেশকে কোটা সংস্কার আন্দোলন দমানোর চেষ্টা হিসেবে মনে করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তকে হঠকারীতামূলক সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেন। কোটা সংস্কারপন্থিদের অনেকে বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত যেকোনো মূল্যে তারা হলে অবস্থান করবেন। তারা বলেন, ‘এটা তাদের অধিকার।’
যদিও আগামীকাল সারা দেশে সর্বাত্মক শাটডাউন কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তারা এই আন্দোলনের নিহতের স্মরণে গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করেন। পরে প্রতীকী কফিন ধরে শপথ করেন। তারা সমস্বরে বলেন, ‘এই আন্দোলন আমরা বৃথা যেতে দেব না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন থেকে সরে যাব না।’
এদিকে, জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। বলেন, কোটা আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্ত হবে এবং যাদের উসকানিতে এই প্রাণহানি, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।