যে কারণে ঢাকা-১৭ আসন থেকে ছিটকে গেলেন হিরো আলম
আসন্ন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হিরো আলম ছিটকে পড়েছেন। তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। মনোনয়ন বাতিল করার কারণ হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিরো আলমের এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর নিয়ে জটিলতার কথা বলেছেন।
নির্বাচন আইন অনুযায়ী, যেকোনো সংসদীয় আসনে নির্বাচন করতে হলে এক শতাংশ ভোটারের নাম ও স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। কিন্তু, এই এক শতাংশ ভোটারেরও স্বাক্ষর নিতে পারেননি হিরো আলম। রিটার্নিং কর্মকর্তার প্রতিনিধিদল সরেজমিন ঘুরে হিরো আলমের দেওয়া এক শতাংশ ভোটারের হদিস পাননি। আর এ কারণ দেখিয়ে হিরো আলমের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান।
আজ রোববার (১৮ জুন) আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) মনোনয়ন বাছাই-বাছাই শেষে মো. মুনীর হোসাইন খান এ তথ্য জানান।
মো. মুনীর হোসাইন খান বলেন, ‘হিরো আলমের দেওয়া এক শতাংশ ভোটার তালিকার হদিস পাইনি আমরা। সরেজমিন ঘুরে আমরা এ তালিকা যাচাই-বাছাই করেছি।’
মো. মুনীর হোসাইন খান আরও বলেন, ‘১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এরমধ্যে বাছাইয়ে সাত জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বাকি আটজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।’
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর হিরো আলমের কাছে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি ষড়যন্ত্র খুঁজে পান? জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার বলেন আর আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যারা আছে তারা আমাকে দেখে ভয়ই পায় কি না, জানি না। তারপরেও প্রার্থিতা ফিরে পাই। কিন্তু, ফিরে পেলেও কি করবো, জয়ী হলেও ছিনিয়ে নেওয়া হয়।’
আদালতে যাওয়া প্রসঙ্গে হিরো আলম বলেন, ‘উনারা যে ভোটারের সংখ্যার কথা বলেছে, তা আমি দিয়েছি। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, ঋণ খেলাপি, মামলাসহ কোনো কিছুই দোষ খুঁজে পায়নি। তারা (নির্বাচন কমিশন) ১০ জন ভোটার না কি খুঁজে পায়নি। কিন্তু, আমার ভোটাররা এখানে উপস্থিত আছে তারা স্বাক্ষরও করছে। আপনারা যদি চান তাহলে ভোটারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তারা নাকি আমার ১০টা ভোটার খুঁজে পায়নি। নির্বাচন কমিশন থেকে আমাকে ফোন দেওয়া হয়, তারা নাকি আমার ভোটার খুঁজে পায় না। তখন আমি তাদের নিজেই সহযোগিতা করি। আমরা একমাস ধরে তিন হাজার ৩০০ ভোটারের নাম সংগ্রহ করেছি, অথচ তারা পেল না। আমার ভোটারদের তারা ভালো করে খুঁজেনি।’
আপনার ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘গুলশান, নিকেতন ও বনানী এলাকার ভোটারের কাছে যায়নি। কমিশন বস্তি এলাকায় গেছে। বস্তি এলাকার মানুষ পুলিশ দেখলে এমনিতেই ভয় পায়। কমিশন কড়াইল বস্তি এলাকায় গেছে। সিভিল ড্রেসে যেতে পারত, অথচ পুলিশ নিয়ে গেছে।’
আদালতে যাবেন কি না, এ প্রসঙ্গে হিরো আলম বলেন, ‘ভোটের লড়াই থাকে। এর আগেও আমি হাইকোর্টে গিয়ে প্রার্থিতা নিয়ে এসেছি। এরপরে ভোটও করছি। যদি আমি চেষ্টা করে প্রার্থিতা নিয়ে আসি, ভোটের ফলাফল জিরো পাব কি না, তা-ও জানি না। মামলা করব কি না, ভোট করব কি না, তা পরে জানাব।’
ভোটে ক্লান্ত কি না, এমন প্রশ্নে হিরো আলম বলেন, ‘না, আমি ভোটে ক্লান্ত না। ভোট করার মতো এনার্জি গায়ে আছে।’
হিরো আলম বলেন, ‘তারা যদি জনপ্রিয়তায় ভয় না পাবে, তাহলে বারবার আমার প্রার্থিতা বাতিল কেন করা হয়? বারবার কেন আমাকে হ্যারেসমেন্ট করা হলো। ভোটে পাস করলেও কেন আমাকে ক্ষমতায় বসানো হয় না? প্রতিবার আমার প্রার্থিতা বাতিল করছে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি কোর্টে গেলে আমার প্রার্থিতা ফিরে পাব। কারণ, সব প্রমাণ আমার কাছে আছে।’