সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ধরাশায়ী ইনু-এনাম
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে পরাজিত হয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনে বর্তমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
জাসদ সভাপতি ইনু ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত জাসদ থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হলেও ২০০৮ সালে মহাজোট থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হন। এরপর ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন দুই লাখ ৮০ হাজার ৬৩৬ ভোট।
কুষ্টিয়া-২ আসনে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী জাসদ সভাপতি ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী কামারুল আরেফিনের কাছে হেরেছেন। ট্রাক প্রতীক নিয়ে কামারুল আরেফিন পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট। আর জাসদ সভাপতি পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট।
কামারুল আরেফিনের রাজনীতি শুরু আশির দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে। এরপর তিনি যুবলীগের রাজনীতি শুরু করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। পরে হামলা-মামলায় টিকতে না পেরে এলাকা ছেড়ে চলে যান। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এলাকায় ফিরে আসেন। ২০১১ সালে মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে তিনি মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ২০১৪ সালে ও ২০১৮ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এ দিকে সদ্য সাবেক একজন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে পরাজিত হয়েছেন বর্তমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। নৌকার মনোনয়নপত্র হাতে পাওয়ার পরের চিত্রটা ডা. এনামের জন্য মোটেও সুখকর ছিল না।
অধিক ভোটারনির্ভর এলাকার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে তিনি যার ওপর অতিমাত্রায় নির্ভর করেছিলেন সেই ধামশোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রাতারাতি পদত্যাগ করে নৌকার মনোনয়ন চেয়েও না পেয়ে নিজেকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়ায় বড় ঝাঁকুনি খান তিনি।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ডা. এনাম হয়েছেন তৃতীয়। প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী ৮৪ হাজার ৪১২ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বনির্ভর ধামশোনা ইউনিয়ন পরিষদের পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ঈগল প্রতীকে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় কপাল পোড়া সাবেক সংসদ সদস্য তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ। তাঁর প্রাপ্ত ভোট৭৬ হাজার ২০২। আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. এনামুর রহমান পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৩৬১ ভোট।