বারকোড কাজ করে কীভাবে
দোকান থেকে কিছু কিনতে গেলে দেখবে প্যাকেটের গায়ে কিছু দাগ কাটা আর তার নিচে কিছু সংখ্যা লেখা থাকে। জিনিসটা কী? – এই চিন্তা নিশ্চয় মাথায় এসেছে? এই লেবেলকে বলে বারকোড।
সংখ্যা বা দাগগুলো আসলে নির্দিষ্ট পণ্যের পরিচিতি, দাম এবং পণ্যটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানায়। সেই সাথে পণ্যটি উৎপাদনে কী ব্যবহার করা হয়েছে তাও জানা যায় বারকোডের মাধ্যমে।
বারকোডের আরেকটি নাম ইউনিফর্ম প্রোডাক্ট কোড (ইউপিসি)। বারকোডের বর্ণনা জানতে হলে দরকার পড়বে বারকোড স্ক্যানার। এই স্ক্যানারকে বলা হয় পয়েন্ট অব সেল (পিওএস)। কোড ভেঙে নির্দিষ্ট পণ্যের তথ্য স্ক্যান করে থাকে স্ক্যানারগুলো।
বারকোডের প্রথম কয়েকটি সাদা এবং কালো দাগ পণ্যের পরিমাণ সম্পর্কে জানায়। সাধারণত কোডগুলো এক থেকে চারটি ইউনিটের পরিমাণ জানিয়ে থাকে।
বারকোডের প্রচলন যখন শুরু হয়, তখন পরপর তিনটি বার থাকত, যেগুলো পণ্যের পরিমাণ সম্পর্কে জানাত। প্রথমে একটি কালো পাতলা বার, তারপর একটি পাতলা সাদা বার এবং আরেকটি কালো বার। এটাকে বলা হতো ‘স্টার্ট কোড’। কারণ এর মাধ্যমে স্ক্যানার বুঝতে পারত কোড কোথা থেকে শুরু হয়েছে এবং সেখান থেকে স্ক্যানার তথ্য দেওয়া শুরু করত।
বারকোডের প্রতি চারটা দাগ, নিচে থাকা একটি সংখ্যার সাথে জড়িত। প্রথম চারটি দাগ নির্দেশ করে কয়টি পণ্য কেনা হয়েছে। বারকোডের মূল অংশগুলো হচ্ছে কালো দাগ। সেখান থেকেই স্ক্যানার তথ্য নিয়ে থাকে। সাদা দাগগুলো কাজ করে কালো দাগের মাঝখানে খালি জায়গা হিসেবে।
বারগুলোর মাঝামাঝি একটা অংশ থাকে, যেখান থেকে স্ক্যানার আবার উল্টো দিক থেকে তথ্য সংগ্রহ করে। ব্যাপারটা অনেকটা পৃষ্ঠা ওল্টানোর মতো। নির্দিষ্ট তথ্য শেষ হয়ে গেলে উল্টো দিক থেকে স্ক্যান করে বাকি তথ্যগুলো সংগ্রহ করে স্ক্যানার। সম্পূর্ণ বারকোড স্ক্যান করা হলে তথ্যগত কোনো ভুল থাকে না এবং পণ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
সাধারণত পণ্যের সাথে দুই ধরনের বারকোড দেওয়া হয়ে থাকে। একটিকে বলা হয় ‘ইএএন’ এবং আরেকটি ‘কোড ৩৯’। দুটি বারকোডই পণ্যের পরিচিতি জানায়। তবে একটিতে বারকোডের নিচে সংখ্যা এবং আরেকটি অক্ষর ব্যবহার করা হয়।
বারকোড অনুমোদনের কাজ করে ইউনিফর্ম কোড কাউন্সিল (ইউসিসি) নামের একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। পণ্য উৎপাদনকারীরা এ জন্য বছরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে থাকেন। এর ভিত্তিতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নামে আলাদা বারকোড সিরিজ বরাদ্দ দেওয়া হয়। ফলে কারো পণ্যের সাথে অন্য কারো পণ্যের তথ্য কখনো মিলে যাবে না।