জিম্বাবুয়েকে হতাশায় ডুবিয়ে শ্রীলঙ্কার রোমাঞ্চকর জয়
পারল না জিম্বাবয়ে, ইতিহাসের একেবারে কাছে গিয়েও ফিরে আসতে হলো গ্রায়েম ক্রেমারের দলকে। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের মাটি কামড়ে টিকে থাকার লড়াইয়ের কাছে হার মানতে হলো সফরকারীদের। কলম্বোতে সিরিজের একমাত্র টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ৪ উইকেটে হারাল শ্রীলঙ্কা। দারুণ এই জয়ে নিজেদের সম্মান বাঁচালেন চান্দিমালরা। কারণ টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর টেস্টে লঙ্কানদের বিপক্ষে কখনই জয়ের দেখা পায়নি জিম্বাবুয়ে। এবারও পেল না দলটি। নিরোশান দিকভেল্লা ও আসেলা গুনারত্নের মহাকাব্যিক ব্যাটিংয়ের সঙ্গে পেরে উঠল না তাঁরা।
কলম্বোতে সাপের মতো বাক নিচ্ছিল বল। ক্রেমার তো বটেই, সিন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজাদের মতো বোলারারও দারুণ টার্ন পাচ্ছিলেন। দারুণ সব স্পিনে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুলেন জিম্বাবুয়ের স্পিনাররা। তবে দিকভেল্লা ও গুনারত্নে হার না মানার ব্রত করেই মাঠে নেমেছিলেন।
চতুর্থ দিনের অপরাজিত ৬০ রান নিয়ে মাঠে নামেন কুশল মেন্ডিস আর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস অপরাজিত ছিলেন ১৭ রানে। আজ দিনের শুরুতেই জোড়া সফলতা পান ক্রেমার। তার ঘূর্ণির সামনে উইকেট দিয়ে আসেন মেন্ডিস ও ম্যাথিউস। এরপরই শুরু হয় দিকভেল্লা-গুনারত্নে কাব্য। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ১২১ রান যোগ করেন তাঁরা। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে দিকভেল্লা যখন ফিরে যান, তখন জয়ের খুব কাছে শ্রীলঙ্কা। দিকভেল্লা ৮১ রান করে আউট হন, লঙ্কানদের রান তখন ৩২৪।
এরপর দিলরুয়ান পেরেরাকে নিয়ে বাকি পথটুক আস্থার সঙ্গেই পাড়ি দেন গুনারত্নে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড। এর আগে শ্রীলঙ্কার মাটিতে সর্বোচ্চ ৩৭৭ রান তাড়া করার রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের দখলে। ২০১৫ সালে পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ৩৭৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়েই ৩৮২ রান তুলে নেয় পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কায় সর্বোচ্চ রান তাড়া করার নিজেদের রেকর্ডটি আজ ভেঙে ফেলল স্বাগতিকরা। ২০০৬ সালে কলম্বোতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়ে শ্রীলঙ্কা।
এর আগে টস জিতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ করে ৩৫৬ রান। ক্রেইগ আরভিন করেন ১৬০ রান। এরপর প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা সব উইকেট হারিয়ে তোলে ৩৪৬ রান। ১০ রান এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে জিম্বাবুয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
প্রথম ইনিংস : জিম্বাবুয়ে ৯০ ওভারে ৩৪৪/৮ (আরভিন ১৫১, সিকানদার ৩৬, ওয়ালার ৩৬, উইলিয়ামস ২২, তিরিপানো ২৪, মাসাকাদজা ১৯, মুর ১৯; হেরাথ ৪/৬৬, গুনারত্নে ২/২৮)।
প্রথম ইনিংস : শ্রীলঙ্কা ৮৩ ওভারে ২৯৩/৭ (থারাঙ্গা ৭১, চান্দিমাল ৫৫, ম্যাথিউস ৪১, পেরেরা ৩৩, গুনারত্নে ২৪, করুনারত্নে ২৫; ক্রেমার ৩/১০০, উইলিয়ামস ১/৩৪)।
দ্বিতীয় ইনিংস : জিম্বাবুয়ে ১০৭.১ ওভারে ৩৭৭/১০ (রাজা ১২৭, ওয়ালার ৬৮, ক্রেমার ৪৮, মুর ৪০; হেরাথ ৬/১৩৩, পেরেরা ৩/৯৫)।
দ্বিতীয় ইনিংস : শ্রীলঙ্কা ১১৪.৫ ওভারে ৩৯১/৬ (দিকভেল্লা ৬১, গুনারত্নে ৮০, মেন্ডিস ৬৬, করুনারত্নে ৪৯, দিলরুয়ান ২৯, থারাঙ্গা ২৭; ক্রেমার ৪/১৫০)।
ফল : শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : আসেলা গুনারত্নে (শ্রীলঙ্কা)
সিরিজ সেরা : রঙ্গনা হেরাথ (শ্রীলঙ্কা)