ক্ষমতা থাকলে আমাদের ঠেকান : নওয়াজকন্যা
‘ক্ষমতা থাকলে আমাদের ঠেকান’, এমন মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মারিয়াম নওয়াজ। স্থানীয় সময় আজ শুক্রবার বাবার পদত্যাগের পর পরই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে এক বার্তায় এ কথা লেখেন তিনি।
ওই টুইটে তাঁর দল মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রতি নিজের অবিচল আস্থার কথাও জানান মারিয়াম।
পানামা নথি কেলেঙ্কারির মামলায় প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজ শরিফকে অযোগ্য ঘোষণা করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এর পর পরই পদত্যাগ করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে মারিয়াম লেখেন, ‘নির্বাচিত আরেকজন প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে সরানো হলো। ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই তিনি আরো শক্তি ও সমর্থন নিয়ে ফিরে আসবেন। পিএমএল-এন দৃঢ় থাকো।’
আরেকটি টুইটারবার্তায় মারিয়াম লেখেন, ‘আজ যা ঘটেছে তা ২০১৮ সালের নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের জয়পথ তৈরি করবে। তাঁকে ঠেকানো যাবে না ইনশাআল্লাহ। ক্ষমতা থাকলে আমাদের ঠেকান।’
পিএমএল-এন সমর্থকদের উদ্দেশে আরেকটি টুইটবার্তায় মারিয়াম লেখেন, ‘ঘুমিয়ে আছেন নাকি? আপনাদের নেতাকে বিচারের মুখোমুখি ও ক্ষমতাচ্যুত করার ঘটনা এই প্রথম না। এ ধরনের প্রতিটা কাজ তাঁকে আরো শক্তিশালী করবে। ইতিহাস সাক্ষী।’
শুক্রবার পদত্যাগের আগে নওয়াজকে অযোগ্য ঘোষণা করে রায় দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে সর্বোচ্চ আদালত পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্ট্যাবিলিটি ব্যুরোকে (এনএবি) ছয় সপ্তাহের মধ্যে মামলার আসামি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ও তাঁর সন্তানদের বিরুদ্ধে একটি মামলার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে বিচার শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী ইশাক দার এবং আইনপ্রণেতা ও প্রধানমন্ত্রী নওয়াজের জামাতা অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন সফদার আওয়ানের বিরুদ্ধেও রেফারেন্স দায়েরের নির্দেশ দেন আদালত।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে পানামা নথি-সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে। সে বেঞ্চই শুক্রবার নওয়াজকে অযোগ্য ঘোষণার রায় দিলেন।
ওই বেঞ্চের পাঁচ সদস্য হলেন বিচারপতি আসিফ সাঈদ খোসা, বিচারপতি এজাজ আফজাল খান, বিচারপতি গুলজার আহমেদ, বিচারপতি শেখ আজমত সাঈদ ও বিচারপতি ইজাজুল আহসান। রায় পড়ে শোনান বিচারপতি এজাজ আফজাল খান।
এর আগে পাকিস্তানের কোনো প্রধানমন্ত্রীই মেয়াদের নির্ধারিত পাঁচ বছর পূর্ণ করতে পারেননি। মুসলিম লীগ সরকারের প্রধান নওয়াজের ভাগ্যেও তা-ই জুটল।
সুপ্রিম কোর্টের এক নম্বর কক্ষে রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার আবেদনকারী আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রধান শেখ রাশিদ ও জামায়াত-ই-ইসলামীর প্রধান শেখ সিরাজুল হক।
আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণাকালে সুপ্রিম কোর্ট ও আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয় ইসলামাবাদ পুলিশ ও পাঞ্জাব রেঞ্জার্সের প্রায় তিন হাজার সদস্যকে।