ময়মনসিংহের সেই ওসিকে সতর্ক করলেন আদালত
জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখানোর অভিযোগে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম আদালতে স্বশরীরে এসে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এ ঘটনায় আজ সোমবার ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার ওসি কামরুল ইসলামকে সতর্ক করে দিয়েছেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) আবুল কালাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সেই ওসি লিখিত জবাব দিয়েছেন। তিনি জবাবে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখ ও লজ্জা প্রকাশ করেন।
আর এএসআই মোয়াজ্জেম হোসেন জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া প্রতিবেদন দাখিল করেননি এবং স্বাক্ষর নিজের নয় দাবি করে ওই বিষয়ে তাঁর কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলেও জানিয়েছেন।
বিচারক ওই জবাবের ওপর শুনানি শেষে ওসিকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘ওই ঘটনার সঙ্গে একজন জড়িত আছে। ওই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করেন। না করলে মামলার রায়ে এ ব্যাপারে অবজারভেশন দেবেন।’
২০১১ সালে নিহত হন জাতীয় অন্ধ সংস্থার মহাসচিব খলিলুর রহমান। পরে এ ঘটনায় মিরপুর থানায় একটি মামলা হয়।
ওই মামলায় ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাক্ষী নুরুজ্জামান শুভ মারা গেছেন বলে আদালতে সনদ দাখিল করেন ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন। এমনকি ওই প্রতিবেদন অগ্রগামী করার জন্য স্বাক্ষর করেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
গত ২৯ নভেম্বর আদালতে সাক্ষী নুরুজ্জামান শুভ হঠাৎ আদালতে হাজির হয়ে ওই মামলায় সাক্ষ্য দেন। পরে বিষয়টি নজরে আনা হলে ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার সাতদিনের মধ্যে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ও এএসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে স্বশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।
এএসআই মোয়াজ্জেম মৃত্যুর প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ‘সাক্ষী নুরুজ্জামান শুভর ঠিকানায় উপস্থিত হইয়া এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া জানা যায় যে, সাক্ষী মৃত্যুবরণ করিয়াছে। বিধায় তাহাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয় নাই। একই সঙ্গে ময়মনসিংহ পৌরসভা থেকে সাক্ষী নুরুজ্জামান শুভর একটি মৃত্যু সনদ দাখিল করা হয়।’
এ ঘটনা আদালতের নজরে আনলে বিচারক সাতদিনের মধ্যে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ও এএসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে স্বশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।