তিন সিটির নির্বাচন সরকার ও ইসির জন্য শেষ পরীক্ষা : মওদুদ
সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জন্য শেষ পরীক্ষা হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে 'মুক্তি বারতা তোমার হাতে দেশমাতা খালেদা জিয়া' গানের সিডি উদ্বোধন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবিতে আয়োজি অনুষ্ঠানে মওদুদ এ মন্তব্য করেন। সমাবেশটি আয়োজন করে জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন।
দলীয় সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিয়ে প্রমাণ করেছে, নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নয়।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আসন্ন তিন সিটিতেও অংশ নেবে বিএনপি। এই তিন সিটি নির্বাচনের পর দলটি নতুন করে চিন্তা করবে যে আর কোনো সাধারণ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে করবে কি না। কারণ এরই মাঝে খুলনা ও গাজীপুর সিটিতে অংশ নিয়ে আমরা প্রমাণ করেছি দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।’
গাজীপুরে কোনো নির্বাচন হয়নি মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার শত প্রপাগান্ডা ছড়ানোর পরেও যাঁরা পত্রিকা পড়েছেন, তাঁরা দেখেছেন যে গাজীপুরে কোনো নির্বাচন হয় নাই। খুলনার পরে আমরা গাজীপুর নির্বাচনে গিয়েছিলাম দেশের মানুষকে জানাতে যে কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না এবং সুষ্ঠু এবং অবাধ হতে পারে না। এটা আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি।’
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা বারবার প্রমাণ করতে চাই এবং এটাই হবে শেষ পরীক্ষা, এই সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের জন্য। এই সিটিগুলোর নির্বাচন যদি খুলনা ও গাজীপুরের মতো হয়, তাহলে প্রথমত আমরা প্রমাণ করতে পারলাম যে একটা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কোনো দিন নিরপেক্ষ হয় না। দ্বিতীয়ত, আমাদের তখন নতুন করে চিন্তা করতে হবে যে সাধারণ নির্বাচন কোনো দলীয় সরকারের অধীনে কোনো অবস্থাতেই আমরা নির্বাচন করব কি করব না। এই তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন আমাদের সেই পথ দেখিয়ে দেবে।’
সাবেক এ আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে আছে, ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত হতে যাচ্ছে। এর চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের ভাগ্যে স্বাধীনতার পর আর আসে নাই। চ্যালেঞ্জটা হলো বাংলাদেশের গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ। কেননা এগুলো সবকিছু আমরা হারিয়েছি।’
আওয়ামী লীগ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জামিন বিলম্ব করার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বিলম্বিত হলেও বেগম জিয়া আমাদের মাঝে খুব শিগগিরই ফিরে আসবেন। তিনি মুক্তি পাবেন, এই মুক্তি কেউ আটকাতে পারবেন না। জামিন একটা মৌলিক অধিকার। জামিন তো মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নয়। আইনে যেকোনো মানুষের জামিন পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু এই আইনের অপপ্রয়োগ করে তার জামিন বিলম্ব করছেন তারা (সরকার)। কারণ নিম্ন ও উচ্চ আদালত তাকে জামিন দিয়ে দিয়েছেন। হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন, আপিল বিভাগ সেটা বহাল রেখেছেন। তার পর আর কিছু থাকে না। কিন্তু পুরোনো কিছু মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে তাকে হয়রানির সম্মুখীন করেছেন। কিন্তু সেটারও জোট খোলা শুরু হয়ে গেছে।’
সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহসংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ও কণ্ঠ শিল্পী মনির খান, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম রানা।