করোনাভাইরাস একদিনেই কেড়ে নিল ২৪২ প্রাণ
যত দিন যাচ্ছে, করোনাভাইরাস যেন তত বেশি প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। আজ বৃহস্পতিবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪২ জনের, যা একদিনে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর। এমনকি এর আগের সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি। গত সোমবার একদিনে ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
এরই মধ্যে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৫০ জনে। এ ছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার মানুষ। নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৪০।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দেওয়া কোভিড-১৯ নামের এই রোগে বুধবার মারা যাওয়াদের মধ্যে অধিকাংশই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। চীনের স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
এদিকে, বিশ্বের অন্তত ২৮টি দেশে এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে, বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। এর ফলে ক্রমেই আতঙ্ক বেড়ে চলেছে বিশ্বজুড়ে।
এর মধ্যে সিঙ্গাপুরে নতুন করে এক বাংলাদেশির শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন বাংলাদেশি। জোহর বারু এলাকায় বসবাসরত ৩৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা। আর এ নিয়ে সিঙ্গাপুরে মোট দুই বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। এ ছাড়া দেশটির সবচেয়ে বড় ব্যাংক ডিবিএসের এক কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় ৩০০ কর্মীকে ছুটি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে হংকংয়েও। এদিকে, দশম ব্রিকস ফরেন মিনিস্টার্স সামিটে করোনা মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। এক বিবৃতি দিয়ে ব্রিকসের পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার এ কথা জানানো হয়।
কোয়ারেন্টাইনে (আলাদা করে রাখা) থাকা জাপানের প্রমোদতরীর যাত্রীদের মধ্যেও বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন করে ৩৯ জন এতে আক্রান্ত হওয়ায় জাহাজটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭৪ জনে।
এদিকে নতুন ধরনের উপসর্গ নিয়ে প্রাণঘাতী হওয়া এই রোগটির নাম দেওয়া হয়েছে কোভিড-১৯। মঙ্গলবার ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রস আধানম গণমাধ্যমে এই নতুন নাম ঘোষণা করেন। পাশাপাশি ১৮ মাসের মধ্যে এই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির কথাও জানান তিনি। জেনেভায় আয়োজিত সম্মেলনে ডব্লিউএইচও প্রধান আরো জানান, এই ভাইরাস এতটাই শক্তিশালী যে এর পরিণাম সন্ত্রাসী কার্যক্রমের চেয়েও ভয়ানক।
টেড্রস আধানম বলেন, ‘প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এতটাই খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টির সক্ষমতা রাখে, যা সন্ত্রাসী সংগঠনেরও নেই এবং এটাই সত্য। বিশ্ব যদি এই ভাইরাস প্রতিরোধে এখনো সচেতন না হয়, তবে এটি মানুষের এক নম্বর শত্রুতে পরিণত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’