‘বিশৃঙ্খলা হয় এমন কোনো কর্মসূচি দেবেন না’ বিএনপিকে কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তার পাশপাশি জীবনের নিরাপত্তাও জরুরি।’ বিরোধী দলকে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি না দিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের বিশৃঙ্খলা হয় এমন কোনো কর্মসূচি দেবেন না। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় আসবেন। জনগণ এখন বেশ সচেতন। নেতিবাচক কোনো কর্মসূচি দিয়ে জনগণের জীবন ও সম্পদকে হুমকির মধ্যে ফেলবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিজেএফ) আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন : খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সবার জন্য খাদ্য এবং তার সঙ্গে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার নানাবিধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও কৃষিজমি কমে যাওয়ায় বর্তমান সরকার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে সারের একাধিকবার মূল্য হ্রাসে করেছে, কৃষি ঋণ বিতরণ, গবেষণায় অগ্রাধিকার, প্রণোদনা প্রদানের ফলে খাদ্য উৎপাদনে স্বযংসম্পূর্ণ।’
ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের (আইডিইবি) সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচলক ড. মো. আব্দুল মুঈদ, হাউজ ব্লিডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. সেলিম উদ্দিন, অর্থনীতিবিদ ড. মো. আসাদুজ্জামান, কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক মো. আসাদুল্লাহ । মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাত হোসেন সরকার। স্বাগত বক্তব্য দেন বিসিজেএফের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সভাপতি কাওসার রহমান।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের সমস্যা। ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক কারণে ঝুঁকিপুর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠ স্থানে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খড়া ইত্যাদির কারণে শুধু কৃষিই নয়, মানুষের চিরচেনা স্বাভাবিক জীবন প্রবাহই আজ ব্যহত। দেশের ৪০ শতাংশ লোক কৃষির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ভবিষ্যৎ মেধাবী জাতি গঠনে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত জরুরি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের জীবন ও জীবিকার ওপর এর প্রভাব অত্যন্ত ক্ষতিকর। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য বাড়ছে। তাই পৃথিবীর সব দেশ ও মানুষ এখন জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে এটাকে মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। যদিও কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে খাদ্য উৎপাদনে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তন পুরোপুরি রোধ করা যায় না। লাগসই প্রযুক্তি ও কৌশল ব্যবহারের ফলে খাদ্য নিরাপত্তা কিছুটা নিশ্চিত করা যায়। সে কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’