সৌদি আরবে হজ অনিশ্চয়তার মুখে বাংলাদেশি হোটেল ও এজেন্সি ব্যবসা

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছর সৌদি আরবে সীমিত পরিসরে পবিত্র হজ আয়োজন করা হতে পারে। এই খবর প্রকাশের পর কিছুটা অনিশ্চয়তার মুখে দিন কাটাচ্ছেন সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনায় বসবাসরত বাংলাদেশি মালিকানাধীন আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীসহ হজ এজেন্সিগুলো।
হজের সময় ঘনিয়ে এলেও এখনো সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় হজের বুকিং নিতে পারছেন না তারা। এদিকে সৌদি প্রশাসনের একটি অংশ চলতি বছর হজ বাতিলের পক্ষে মত দিয়েছে।
মরণঘাতী করোনাভাইরাসে সৌদি আরবেও ব্যাপক হারে প্রতিদিন করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সবশেষ তথ্য মতে, সোমবার সকাল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৪১ জন। আর এখন পর্যন্ত ৯৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ৩১০ জনই প্রবাসী বাংলাদেশি। আর সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৮৪ হাজার ৭২০ জন।
এদিকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে হজ ও ওমরাহ ভিসা স্থগিত করে দেশটির সরকার।
এমন নাজুক পরিস্থিতিতে এ বছর পবিত্র হজ পালন নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেয়নি সৌদি আরব সরকার। এরই মধ্যে হজের কোনো সিদ্ধান্ত আসার আগেই আগাম হজের বুকিং না করার আহ্বানও জানিয়েছেন দেশটির হজবিষয়ক মন্ত্রী।
সৌদি সরকার চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় নানা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে দেশটির বাংলাদেশি মালিকানাধীন আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী ও হজ এজেন্সিগুলো।
হজ ফরজ হওয়ার পর থেকে ইসলামের ইতিহাসে নানা সময়ে হজ ও ওমরাহ বন্ধ ছিল। যুদ্ধ-বিগ্রহ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মহামারির প্রাদুর্ভাব ও বৈরী আবহাওয়াসহ নানা কারণে অনেকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনায় বসবাসরত বাংলাদেশি কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলেন এ প্রতিবেদক।
মক্কার হোটেল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত হজের ঘোষণা না হওয়ায় আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। হজের সময়ও খুব নিকটে। এমনিতে করোনার কারণে আমাদের হোটেল ব্যবসায় ধস নেমেছে।’
মক্কার ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ী আমান উল্লাহ সমরকন্দী বলেন, ‘আমরা এখনো হজের কোনো প্রস্তুতি নিতে পারিনি। তবে সীমিত পরিসরে হজ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমাদের আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।’
মদিনার হোটেল ব্যবসায়ী মোহাম্মদ বশির বলেন, ‘আমরা হাজিদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। তবে করোনার কারণে হঠাৎ পবিত্র ওমরাহ বন্ধ হওয়ায় আমাদের অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে। এদিকে হজ নিয়ে আমরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছি। জানি না শেষ পর্যন্ত হজ হবে কিনা? সেই অনিশ্চয়তার মুখে দিন কাটাচ্ছি।’
বিশ্বে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ পবিত্র হজ। আগামী ৩০ জুলাই পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বের মুসলমানদের অংশগ্রহণে না হলেও চলতি বছর স্থানীয় পর্যায়ে সীমিত আকারে হলেও পবিত্র হজ সম্পন্ন হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।