মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের গানের প্রতিযোগিতা

মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে শুরু হচ্ছে ‘এমএম লাইভ-সিঙ্গারস অব লাইফ’ গানের প্রতিযোগিতা।
এ ব্যাপারে গত রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় কুয়ালালামপুর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এমএম লাইভের কো-ফাউন্ডার ও প্রধান নির্বাহী জাফর ফিরোজ। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এমএম লাইভের অফিসার অ্যাডমিন ক্রিতানা।
সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা জানান, ‘প্রবাসী গাও জীবনের গান’ স্লোগানে মালয়েশিয়া প্রবাসী ছাড়াও এ প্রতিযোগিতায় সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
আয়োজকরা আরো জানান, এ প্রতিযোগিতার লক্ষ্য শুধু প্রতিভার সন্ধান নয়, এর লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মালয় ও বাঙালি সংস্কৃতির মধ্যে একটি ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করা। সেইসঙ্গে বাঙালি সুরকে বিশ্বদরবারে ছড়িয়ে দেওয়া।
আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন, গ্র্যান্ড ফিনালেতে মালয়েশিয়ান শিল্পীদের সঙ্গে কয়েকটি দেশের শিল্পীরাও বাংলা গান পরিবেশন করবেন।
প্রবাসে এ কাজ একার পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। তাঁরা জানান, মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিভাবক বাংলাদেশ হাইকমিশন, বাংলাদেশ কমিউনিটি, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসীদের নিয়ে এই কাজ সম্পন্ন করতে চান। এ ছাড়া সংস্কৃতির আদান-প্রদানের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধনকে আরো দৃঢ় করার কথাও উল্লেখ করেন আয়োজকরা।
‘এমএম লাইভ-সিঙ্গারস অব লাইফ-২০২০’-এর অনলাইন অডিশন রাউন্ড শুরু হয়েছে গত ২০ অক্টোবর রোববার থেকে। এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রতিযোগীদের এমএম লাইভ অ্যাপে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করতে হবে। ওই অ্যাপে অডিশন নামে একটি অপশন দেওয়া আছে। সেখানে প্রতিযোগীরা মোবাইলে গানের ভিডিও ধারণ করে আপলোড করবেন।
সেখান থেকে ১০০ জনকে বাছাই করে দর্শকদের ভোটের জন্য এমএম লাইভ অ্যাপে সবার জন্য ভিডিওটি উন্মুক্ত করা হবে। দর্শকদের ভোট ও বিচারকদের মাধ্যমে সেখান থেকে ৫০ জনকে স্টুডিও রাউন্ডের জন্য বাছাই করা হবে। স্টুডিও রাউন্ডে থাকবে বাংলা চলচ্চিত্রের চার নায়ক সালমান শাহ, রাজ্জাক, ফারুক ও ইলিয়াস কাঞ্চন অভিনীত চলচ্চিত্রের গান।
এখানেও দর্শকদের ভোট ও বিচারকদের ভোটে সেরা ২০ জনকে বাছাই করা হবে। সেমিফাইনালে সেরা ২০ জনের মধ্য থেকে ১০ জনকে বাছাই করে ফাইনাল রাউন্ডের জন্য মনোনীত করা হবে। সেরা ১০ জন নিয়ে হবে গ্রুমিং রাউন্ড। গ্রুমিং রাউন্ড শেষে সেরা ১০ জন গাইবেন ফাইনাল রাউন্ডে।
দর্শকরা ফাইনাল রাউন্ডসহ সব রাউন্ড এমএম অ্যাপের মাধ্যমে দেখতে পারবেন। প্রতিযোগী ও অনলাইন দর্শকদের জন্য রয়েছে ২০ হাজার রিঙ্গিত সমমানের পুরস্কার। আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন, পুরস্কারের পরিমাণ গ্র্যান্ড ফিনালে পর্যন্ত আরো কয়েক গুণ বাড়তে পারে।
আয়োজকরা জানান, অডিশন রাউন্ডের জন্য বাছাই করা প্রতিযোগীদের নিয়ে ইভেন্টের মূল পর্বে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন একুশে পদকপ্রাপ্ত প্লেব্যাক সিঙ্গার মো. খুরশীদ আলম, একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, বিশিষ্ট সংগীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খান, জনপ্রিয় প্লেব্যাক সিঙ্গার কনকচাঁপা, সংগীত পরিচালক সজীব দাশ ও শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা ঐশী।
এরই মধ্যে প্রতিযোগিতার টাইটেল গান তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছন আয়োজকরা। জাফর ফিরোজের কথায় এর সুর করেছেন সজীব দাস, কণ্ঠ দিয়েছেন শিল্পী আরজে রাজু। অডিশন রাউন্ডের প্রাথমিক বাছাই চলবে অক্টোবর মাসব্যাপী। অর্থাৎ আগামী ৩১ অক্টোবর অনলাইন ভিডিও জমা দেওয়ার শেষ দিন।
আয়োজকরা আরো জানান, বিচারকদের রায় ও দর্শকদের অনলাইন ভোটে নির্বাচন করা হবে সেরা তিন। সেরা তিনজনকে নিয়ে মৌলিক মিউজিক ভিডিও নির্মাণ করা হবে। ‘এমএম লাইভ-সিঙ্গারস অব লাইফ’ সেরা তিনজনের জন্য রয়েছে ১০ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (দুই লাখ টাকা) সমমানের পুরস্কার ও সেরা ২০ জনকে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও আকর্ষণীয় গিফট দেওয়া হবে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ প্রতিযোগিতার বিশেষ একটি দিক হলো দর্শকদের জন্য পুরস্কার। অনলাইন ভোটে অংশগ্রহণকারী দর্শকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে তিনজনকে ১০ হাজার রিঙ্গিত সমমানের আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হবে। মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে দর্শকরা এই ভোটে অংশ নিতে পারবেন বলে জানান আয়োজকরা।