উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হল ডব্লিউইউএসটির সমাবর্তন ২০২৪
উৎসবমুখর পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-ডব্লিউইউএসটির সমাবর্তন- ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভার্জিনিয়ার আলেক্সান্দ্রিয়া সিটি হাইস্কুলে গত শনিবার (২৯ জুন) এই সমাবর্তনে ২১৩ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেওয়া হয় গ্রাজুয়েশন সনদ ও সম্মাননা। কালো গাউন আর মাথায় গ্রাজুয়েশন হ্যাট পরে শিক্ষার্থীরা আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সাথে সনদ গ্রহণ করেন। সমাবর্তনে প্রধান অতিথি ও কিনোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি সভার সদস্য কংগ্রেসম্যান গেরি কোনোলি।
দুপুর না গড়াতেই নব্য গ্রাজুয়েটদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে সিটি হাইস্কুলের ক্যাম্পাস অঙ্গন। সমাবর্তনে উপস্থিত হন শত শত শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। অন্যদিকে যথাসময়ে অনুষ্ঠান স্থলে এসে একে একে পৌছে যান বিশিষ্ট অতিথিগণ। ততক্ষণে কালো গাউনের ওপর কেউ লাল ও নীল রঙের ব্যাচেলর'স হুড কেউবা কমলা ও লাল রঙা মাস্টার্স হুড পরে প্রস্তুত।
দুপুর ২টায় সিটি হাইস্কুলের আলো ঝলমল অডিটরিয়ামে প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিফের নেতৃত্বে লিডারশিপ প্রোসেশন শেষে অভ্যাগত অতিথি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ও শিক্ষকদের একটি দল মঞ্চে অবস্থান নেন। গ্রাজুয়েশন প্যারেড করে কমেন্সমেন্ট হলরুমে ঢুকেন শিক্ষার্থীরা। এরপর আমেরিকার জাতীয় সংগীতে শুরু হয় সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা।
আয়োজনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিফ। শিক্ষার্থীদের প্রতি তিনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে তাকে ডব্লিউইউএসটি থেকে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও ইতিবাচক বৈশিষ্টাবলী দিয়ে মোকাবিলা করার পরামর্শ দেন।
এরপর কি কি-নোট স্পিকার হিসেবে মূল্যবান বক্তব্য দেন ইউএস কংগ্রেসম্যান গেরি কনোলি। শিক্ষার্থীদের জন্য তার নির্দেশনামূলক বক্তব্যে তিনি প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ও গ্রাজুয়েটদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, প্রযুক্তিজ্ঞান ও দক্ষতাকে ব্যবহার করেই জলবায়ূ পরিবর্তন, অতিমারি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার, অপতথ্য ও সাইবার অপরাধের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
সমাবর্তনের অন্যতম বক্তা ছিলেন ভার্জিনিয়া হাউজ অব ডেলিগেটসের সদস্য ক্যারেন কিজ-গামারা। প্রতিদিনই নতুন কোনো অর্জনের চেষ্টায় নিয়োজিত থাকা এবং কমিউনিটির উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য গ্রাজুয়েটিং শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ডব্লিউইউএসটি'র সিএফও ফারহানা হানিফ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্রে তার নিজের চলার পথের চ্যালেঞ্জগুলোর কথা জানিয়ে বলেন, স্রেফ নিজের ওপর নিজের বিশ্বাস রাখা আর যে কোনো বাধাকে সুযোগে পরিণত করতে পারলেই মিলবে সফলতা।
অনুষ্ঠানে অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন জর্জিয়ার স্টেট সিনেটর শেখ রহমান, ভার্জিনিয়ার স্টেট সিনেটর সাদ্দাম আজলান সেলিম, চীনের এইচডিডি গ্রুপের পরিচালক ড. হুসেইন ভূঁইয়া, ফিনটেক ইকো সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট এর কর্নধার ড. সাইফুল খন্দকার, ডব্লউইউএসটির বোর্ড সদস্য সিদ্দিক শেখ, ডব্লিউইউএসটি স্কুল অব প্রফেশনালস এর পরিচালক ও বোর্ড সদস্য মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান ও অ্যাকসেনচুয়েট এর সিইও ও বোর্ড সদস্য নাসিরুল হক।
এটি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি-আমেরিকানের হাতে পরিচালিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে তথ্য-প্রযুক্তি, সাইবার সিকিউরিটি ও ব্যবসায়িক প্রশাসনের উপর ব্যাচেলর ও মাস্টার্স কোর্সে বর্তমানে বিশ্বের ১২১ দেশের প্রায় ১৭শ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি সাম্প্রতিক সময়ে ভার্জিনিয়ার ফাস্টেস্ট গ্রোয়িং বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে যেমন পরিচিতি পেয়েছে তেমনি স্বীকৃতি পেয়েছে স্টেট সিনেট ও লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির। এমবিএ প্রোগ্রামের জন্য ভার্জিনিয়ার সেরা র্যাংকিংয়ে উঠে এসেছে ডব্লিউইউএসটির নাম।