আপনার জিজ্ঞাসা
মানুষের ওপর জিনের প্রভাব আছে কি?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৫১৯তম পর্বে মানুষের ওপর জিনের কোনো প্রভাব আছে কি না, সে সম্পর্কে ঢাকার মিরপুর থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন নাজমা ইসলাম। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : আমার প্রশ্ন হচ্ছে জিন সম্পর্কে। জিন তো দুনিয়াতে আছে। এটি মানুষের ওপর কতটুকু প্রভাব বিস্তার করে? আমার দুই বছরের একটা বাচ্চা আছে। সে প্রায়ই রাত ১টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কাঁদতে থাকে। ডাক্তারকেও দেখিয়েছি, কোনো উপকার পাইনি। এর পর আমাদের মসজিদের হাফেজ সাহেবের কাছে নিয়ে গিয়েছি। উনি বলেছেন, আমার বাচ্চার ওপর খারাপ জিনের প্রভাব রয়েছে, যাকে আমরা বদনজর বলি। সেই হাফেজ সাহেব আমার বাচ্চাকে ঝেড়ে দিয়ে একটি তাবিজ দিলেন। আল্লাহর রহমতে আমার বাচ্চা এখন আর কান্নাকাটি করে না। এখন এই তাবিজটির ওপর আমরা কতটুকু বিশ্বাস রাখতে পারি?
উত্তর : মানুষের ওপর জিনের প্রভাব রয়েছে। খারাপ জিনরা কখনো কখনো মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করে এবং অনেকের ক্ষতিও করে। এটি কোরআনের বক্তব্যের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে সাব্যস্ত হয়েছে। জিনদের সেই ক্ষমতা বা শক্তি আছে। আপনার বাচ্চার ওপর জিনের আছর হতে পারে—এটা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে।
এর পর আপনি মসজিদের ইমামের কাছে গিয়েছেন। তিনি আসলে সুন্নাহ অনুযায়ী ঝাড়-ফুঁক করলে ভালো হতো। জিনের আছর অথবা বদনজর যদি হয়, তাহলে তার জন্য শরিয়া অনুযায়ী ঝাড়-ফুঁক করাটাই জায়েজ হতো। কিন্তু তিনি তা না করে তাবিজ দিয়েছেন। এই তাবিজ দেওয়াটা হারাম ও শিরকি কাজ এবং এর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা কুফরি। যদি আপনি বিশ্বাস স্থাপন করেন, তাহলে মুহাম্মদের (সা.) ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে, তার ওপর আপনি কুফরি করলেন। আপনার এই আকিদা সম্পূর্ণভাবে ইমান বিনষ্টকারী কাজ, এখান থেকে আপনাকে ফিরে আসতে হবে। তাবিজের মাধ্যমে আপনার সন্তানের ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ হবে না।