তামিম-মুশফিকের ব্যাটিং নৈপুণ্যে লড়াকু পুঁজি বাংলাদেশের
বৃষ্টির কারণে প্রথম ওয়ানডে পরিত্যক্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দুর্দান্ত জয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। সেই স্বপ্ন পূরণে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। অধিনায়ক তামিম ও মুশফিকের দৃঢ় ব্যাটিংয়ে আইরিশদের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ রোববার (১৪ মে) ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডের কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৭৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে তামিম সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন। জিততে হলে তাই আইরিশদের প্রয়োজন ২৭৫ রান।
চোটের কারণে অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের না থাকার ম্যাচে বাংলাদেশের জার্সিতে ওয়ানডেতে পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও ব্যাটার রনি তালুকদারের অভিষেক হয়। এছাড়াও গত ম্যাচে থাকা শরিফুল ইসলাম ও তাইজুল ইসলামকে আজকের ম্যাচে একাদশে রাখা হয়নি।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে অভিষেক রাঙাতে পারেননি রনি তালুকদার। দলীয় ১৮ রানের মাথায় মার্ক অ্যাডায়ারের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে থাকা লোরকান ট্রাকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ৪ রান।
রনির বিদায়ের পর দুর্দান্ত ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে জুটি গড়েন তামিম ইকবাল। এই দুইজনের ব্যাটে ভালো এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে ফের ছন্দপতন। দলীয় ৬৭ রানের মাথায় ইয়ংয়ের করা বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন শান্ত। যা লুফে নিতে ভুল করেননি আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি। ৩২ বলে ৩৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
শান্তর বিদায়ের পর লিটন দাসকে নিয়ে দেখেশুনে ব্যাটিং করে বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত দেন তামিম। তবে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন। ম্যাকব্রাইনের শর্ট ডেলিভারিতে অ্যাডায়ারের মাথার ওপর দিয়ে বল বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেননি লিটন। দলীয় ১৩৭ রানে ক্যাচ তুলে ফেরেন ৩৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে।
এরপর গত ম্যাচে দারুণ খেলা তরুণ ক্রিকেটার তাওহিদ হৃদয় এই ম্যাচেও ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে পারেননি ধৈর্য্য ধরে রাখতে। দলীয় ১৫৯ রানে জর্জ ডকরেলের কিছুটা নিচু হয়ে যাওয়া বল বুঝতে পারেননি হৃদয়। বোল্ড আউট হয়ে ১৬ বলে ১৩ রান করে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এরপর ফিফটি তুলে নেন অধিনায়ক তামিম। অফফর্মে থাকা তামিম সেঞ্চুরির আশা দেখালেও তা পূরণ করতে পারেননি। দলীয় ১৮৬ রানে ডকরেলের করা বলে তুলে মারতে গিয়ে ইয়ংয়ের হাতে ধরা পড়েন তামিম। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৮২ বলে ৬৯ রান।
তামিমের বিদায়ের পর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম। জাতীয় দলের এই দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটারের ব্যাটিংয়ে চাপে পড়ে আয়ারল্যান্ড। কোনোভাবেই তাদের উইকেট নিতে পারছিল না আইরিশ বোলাররা। শেষমেষ দলীয় ২৬১ রানে ম্যাকব্রাইনের করা বলে সুইপ শট খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ৫৪ বলে ৪৫ রান করে আউট হন মুশফিক।
মুশফিকের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ব্যাটার মিরাজও। দলীয় ২৬৫ রানে ৩৯ বলে ৩৭ রান করে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে ক্রেইজ ইয়ংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মিরাজ। এরপর শেষদিকের ব্যাটারদের কল্যাণে ১০ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৭৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন অ্যাডায়ার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২৭৪/১০ (তামিম ৬৯, রনি ৪, শান্ত ৩৫, লিটন ৩৫, হৃদয় ১৩, মুশফিকুর ৪৫, মিরাজ ৩৭, মৃত্যুঞ্জয় ৮, হাসান ১, এবাদত ১*, মুস্তাফিজুর ০ ; লিটল ৯-০-৬৫-০, অ্যাডায়ার ৮.৫-০- ৪০-৪, ইয়ং ১০-০-৫৩-১, ক্যাম্ফার ৫-০-৩৭-০, ম্যাকব্রাইন ৯-০-৩৯-২, ডকরেল ৭-০-৩১-২)