‘ফুটবলের জন্যই এটা অশনি সংকেত’
এত দিন ফুটবল-সংশ্লিষ্ট অনেকেরই গর্ব ছিল ফিফাকে নিয়ে। জাতিসংঘের চেয়েও যে সংগঠনের সদস্যা-সংখ্যা বেশি, তাদের নিয়ে গর্ব হতেই পারে। অথচ সেই ফিফাই আজ দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার। সাত শীর্ষ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার ও জুরিখে সদর দপ্তরে পুলিশের হানা বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভাবমূর্তিতে এক রাশ কালি ঢেলে দিয়েছে। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কোচ গোলাম সারোয়ার টিপুর ধারণা, এসব ঘটনায় ফিফার অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার সভাপতি নির্বাচনের ঠিক আগে এ ধরনের ঘটনা ফিফার প্রশাসনের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা বলেই মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার এনটিভি অনলাইনকে টিপু বলেন, ‘একজন সাবেক ফুটবলার হিসেবে ঘটনাটা শুনে আমার খুব খারাপ লাগছে। ফুটবলের সবচেয়ে বড় সংগঠনে এমন কলঙ্কের দাগ লাগবে তা কখনো ভাবিনি। জীবদ্দশায় এমন ঘটনাও দেখতে হলো! এটা আমাদের জন্যই লজ্জার।’
২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে জুরিখে ফিফার সদর দপ্তরে সুইস পুলিশ হানা দিয়ে বেশ কিছু নথিপত্র জব্দ করেছে। এ প্রসঙ্গে জাতীয় দলের সাবেক কোচ বলেন, ‘আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল ফিফার কিছু কর্মকর্তা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে যে অর্থের লেনদেন হয়েছিল এখন তো তা অনেকটাই প্রমাণিত। এই ঘটনা ফিফার প্রশাসনে একটা বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে। ফিফার দীর্ঘ ইতিহাসে এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি।’
গত দুই দশকে বহু দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ফিফার বিরুদ্ধে। বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার প্রতিযোগিতা, বিপণন ও সম্প্রচার স্বত্ব, টাকা পাচার ইত্যাদি অভিযোগ সম্পর্কে টিপুর অভিমত, ‘ফিফার বিস্তার অনেক বেশি। নানান ক্ষেত্রে নানা লেনদেন করে সংগঠনটি। আর এই সুযোগেই দুর্নীতি ঢুকে পড়েছে। তবে এমন একটা সংগঠনে দুর্নীতি কারোরই কাম্য নয়। যদি অভিভাবকই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে অন্যদের অবস্থা তো আরো খারাপ হবে।’
এসব ঘটনা ফুটবলের জন্য ‘অশনি সংকেত’ বলে মনে করেন জাতীয় দলের এই সাবেক ফুটবলার, ‘সর্বোচ্চ সংস্থার দুর্নীতি ফুটবলের ভবিষ্যতকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এটা একটা অশনি সংকেত। এমন চলতে থাকলে ফুটবল ধীরে-ধীরে তার মর্যাদার আসন হারিয়ে ফেলবে।’
তবে ফিফা-কাণ্ডের প্রভাব বাংলাদেশের ফুটবলে খুব একটা পড়বে বলে মনে করেন না টিপু, ‘ফিফার ভেতরে দুর্নীতি হলেও তার প্রভাব বাংলাদেশের ফুটবলে পড়ার কথা নয়। যদিও ফিফার অনেক সাহায্য-সহযোগিতার ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয়। তবে আমার মনে হয় না এসব ঘটনায় আমাদের এগিয়ে চলা বাধাগ্রস্ত হবে।’