ইউএস ওপেন জিতেই পেন্নেত্তার বিদায়
এবারের ইউএস ওপেনে মহিলা এককের শিরোপা জয়ের লড়াই শুধু বিস্ময়ই উপহার দিয়েছে টেনিস বিশ্বকে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউএস ওপেন দেখেছে দুই ইতালিয়ানের ফাইনাল। রোবের্তা ভিঞ্চি ও ফ্লাভিয়া পেন্নেত্তা সেমিফাইনালে ধরাশায়ী করেছেন টেনিস র্যাংকিংয়ের এক ও দুই নম্বর সেরেনা উইলিয়ামস ও সিমোনা হালেপকে। একের পর এক চমকের পর ইউএস ওপেনের শেষেও মহাবিস্ময়। শিরোপা জিতেই ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন পেন্নেত্তা!
পেন্নেত্তা ও ভিঞ্চি দুজনেই প্রথমবারের মতো উঠেছিলেন কোনো গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে। তাই ইউএস ওপেন যে একজন নতুন ‘রানী’র দেখা পেতে যাচ্ছে, তা আগেই জানা ছিল। শেষ চারে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা সেরেনাকে হারিয়েছেন বলে হয়তো ভিঞ্চিকে এগিয়ে রেখেছিলেন অনেকে। কিন্তু ফাইনালে পেন্নেত্তার কাছে তেমন পাত্তা পাননি ভিঞ্চি। প্রথম সেটে তীব্র লড়াই হলেও দ্বিতীয় সেট সহজেই জিতেছেন পেন্নেত্তা। খেলার স্কোর : ৭-৬(৭/৪), ৬-২। ফ্রানচেস্কা স্কিয়াভোনের পর দ্বিতীয় ইতালিয়ান নারী হিসেবে গ্র্যান্ড স্লামের শিরোপা জিতলেন ৩৩ বছর বয়সী পেন্নেত্তা। টেনিসের ওপেন যুগে সবচেয়ে বেশি বয়সে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের কৃতিত্ব তাঁরই। আর সবচেয়ে বেশি বয়সে গ্র্যান্ড স্লামজয়ীদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছেন তিনি।
পেন্নেত্তার শিরোপার চেয়েও অবশ্য তাঁর ঘোষণা সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জিতে, ট্রফি আর ৩৩ লাখ ডলারের চেক হাতে নেওয়ার আগেই তিনি বলেছেন, ‘আমি এখনই টেনিসকে বিদায় বলতে চাই। আমি সত্যিই খুব খুশি। এভাবে একটা বড় শিরোপা জিতেই মনে হয় সব খেলোয়াড় ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চান। ইউএস ওপেনের এই ম্যাচটাই ছিল আমার জীবনের শেষ ম্যাচ। এর চেয়ে ভালোভাবে বিদায় নেওয়ার কথা আমি ভাবতেই পারতাম না।’
পেন্নেত্তার ছোটবেলার বন্ধু ভিঞ্চি। জীবনের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ প্রিয় বন্ধু ছিলেন বলে পেন্নেত্তা একটু বেশিই খুশি, ‘আমরা একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি। ১৩/১৪ বছর বয়সে আমরা একসঙ্গেই রোমে এসেছিলাম। চার বছর আমরা একই ঘরে ছিলাম। আমরা বোনের মতো। ক্যারিয়ারের এমন আনন্দময় মুহূর্তে সেরা বন্ধুকে পাশে পাওয়া দারুণ ব্যাপার।’
সেমিফাইনালে সেরেনাকে হারিয়ে ভিঞ্চিও স্বপ্ন দেখছিলেন প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের। কিন্তু সেটা না হলেও তেমন আক্ষেপ নেই তাঁর। ছোটবেলার বন্ধু পেন্নেত্তার হাতে শিরোপা দেখে তিনি কম খুশি হননি, ‘অলৌকিক ঘটনা ঘটতেই পারে। কারণ আমি সেরেনাকে হারিয়েছি, যা ছিল অলৌকিক ব্যাপার। আবার দুজন ইতালিয়ানের গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে ওঠাও একটা অলৌকিক ব্যাপার।’