অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে এখন পালাবদলের পর্ব চলছে। বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অবসর নিয়েছেন। চোট আর কয়েকজনের বিশ্রাম মিলিয়ে আসন্ন বাংলাদেশ সফরে প্রায় নতুন চেহারার এক অস্ট্রেলিয়াকে দেখা যাবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের এ বছরটা দারুণ কাটছে। সাকিব-মুশফিকরা সব প্রতিপক্ষের জন্যই যে হুমকি, তা আর অস্বীকার করার উপায় নেই কারো। বাংলাদেশের সাবেক কোচ স্টুয়ার্ট ল তো অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের একটা হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন। তাঁর ধারণা, বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়াকে কঠিন পরীক্ষার সামনে পড়তে হবে। 

ইংল্যান্ডের কাছে ঐতিহ্যবাহী অ্যাশেজে হারের হতাশা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক ও ক্রিস রজার্স। তাঁদের পথ অনুসরণ করে অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্র্যাড হ্যাডিন আর পেসার রায়ান হ্যারিসও অবসর নিয়েছেন। অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন শুধু ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চোটের কারণে বাংলাদেশে আসতে পারছেন না ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে দুই পেসার মিচেল জনসন ও জশ হেজেলউডকে।

নতুন চেহারার অস্ট্রেলিয়া আর সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের দারুণ পারফরম্যান্স পাশাপাশি রেখে তীব্র লড়াইয়ের ছবি আঁকছেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একটি টেস্ট ও ৫৪টি ওয়ানডে খেলা স্টুয়ার্ট ল। ২০১২ এশিয়া কাপে রানার্সআপ বাংলাদেশ দলের কোচ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যদি সাম্প্রতিক সময়ের কাছাকাছি মানেরও ক্রিকেট খেলতে পারে, তাহলেও তারা অস্ট্রেলিয়াকে ভয় পাইয়ে দিতে পারবে। যারা মনে করছে যে অস্ট্রেলিয়া হেসে-খেলে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দেবে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। বাংলাদেশ লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।’

বাংলাদেশের ‘প্রতিকূল’ পরিবেশও স্টিভেন স্মিথের নেতৃত্বাধীন দলটির সামনে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন ল, ‘বুঝতে পারছি সেখানে এখন অনেক গরম। বল অনেক টার্নও করবে। অস্ট্রেলিয়া দলকে তাই কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশকেও ভালো খেলতে হবে। তাহলেই লড়াইটা দারুণ জমবে।’

অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে থাকা একটা দল নিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসছে অস্ট্রেলিয়া। ১৫ সদস্যের দলটির ১০ জনই ১০টির বেশি টেস্ট খেলেননি। তারুণ্যনির্ভর দলটির সাতজনের বয়স ২৬ বছরের নিচে। দুজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষায়। বর্তমানে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের টেকনিক্যাল উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা লর অবশ্য ধারণা, ওয়ানডের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ‘রূপান্তর প্রক্রিয়া’ শেষ হতে বেশ কিছুটা সময় প্রয়োজন, ‘অস্ট্রেলিয়া একটা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান দলটার চেহারা বেশ আলাদা। সম্প্রতি দলে যে অভিজ্ঞতার ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তা পূরণ করা খুবই কঠিন।’

টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার স্মৃতি অবশ্য বাংলাদেশের জন্য সুখকর নয়। এর আগে চারটি টেস্টের সবকটিতেই অস্ট্রেলিয়া জিতেছে। এর মধ্যে তিনটিই ইনিংস ব্যবধানে। তবে বাংলাদেশ এখন বদলে যাওয়া এক দল। ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকাকে ওয়ানডে সিরিজে অনায়াসে হারিয়েছে। টেস্টেও পারফরম্যান্স আগের চেয়ে অনেক ভালো। গত দুই বছরে ঘরের মাঠে সর্বশেষ ১২টি টেস্টের মাত্র দুটিতে হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।