এশিয়া কাপে বাংলাদেশের যত রেকর্ড
এশিয়া কাপের উদ্বোধনী দিনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩৭ রানের দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। দেশের বাইরে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। এই আরো অনেক রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ দল।
দেশের বাইরে এর আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ব্যবধানে জয়ের ঘটনা ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০১৩ সালে বুলাওয়েতে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ১২১ রানে। এশিয়া কাপের ১৪তম আসরে প্রথম ম্যাচেই এই রেকর্ড ভেঙে ১৩৭ রানের ব্যবধানের নতুন মাইলফলক গড়ে টাইগাররা।
এই ম্যাচ শ্রীলঙ্কার জন্য এশিয়া কাপে সবচেয়ে বেশি রান ব্যবধানে হারের লজ্জা এনেছে। ১৯৮৬ সালে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের কাছে ৮৬ রানে হেরেছিল শ্রীলঙ্কা। সেটিই এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার ছিল। তবে গত ম্যাচের মতো এত বেশি ব্যবধানে ভারত, পাকিস্তান কিংবা খোদ শ্রীলঙ্কাও এর আগে কোনো দিন হারেনি! এমনকি ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের ১০০ রানে হারের রেকর্ড ছাড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা নিজেই।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এত কম রানে আর কখনো আউট হয়নি শ্রীলঙ্কা। ২০০৯ সালে ঢাকায় বাংলাদেশের বিপক্ষে লঙ্কানদের সর্বনিম্ন রান ছিল ১৪৭। এই রেকর্ড ভেঙে মাত্র ১২৪ রানের নতুন লজ্জার রেকর্ড গড়েছে শ্রীলঙ্কা।
স্বীকার করতেই হবে, ২৬১ রানের ইনিংসে ১৪৪ রানের একটি অনন্য ইনিংস খেলেন উইকেটরক্ষক -ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। এর মাধ্যমে বাংলাদশ দলে রানের অবদানে নিজেকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এর আগে বাংলাদেশের এক ম্যাচের ব্যাটিং ইনিংসে মোট রানের সর্বোচ্চ শতকরা ৫৪.৮২ ভাগ এসেছিল তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে। ঢাকায় ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৮ রানের মধ্যে তামিম একাই করেছিলেন ১২৫। গত ম্যাচে মুশফিকের অবদান ১৪৪ রান, যা মোট রানের শতকরা ৫৫.১৭ ভাগ! গত ম্যাচের মাধ্যমে মুশফিক ছাড়িয়ে গেছেন তামিমকেও।
২০১২ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে বিরাট কোহলি করেছিলেন ১৮৩, যা এশিয়া কাপে এ পর্যন্ত একক সর্বোচ্চ রান। তবে মুশফিক নিজেকে নিয়ে এসেছেন দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সাবেক পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ইউনিস খানের পাশে। ইউনিস ২০০৪ সালের এশিয়া কাপে হংকংয়ের বিপক্ষে ১৪৪ রান করেছিলেন। মুশফিকের এই শতক এশিয়া কাপে দ্বিতীয়। মুশফিকের এই শতক এশিয়া কাপে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে পঞ্চম এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
২০০৯ সালে তামিম ইকবাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৫৪ রান করে একক সর্বোচ্চ রানের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন। এর আগে ওয়ানডেতে মুশফিকের সর্বোচ্চ রান ছিল ১১৭। সেটিও মুশফিক করেছিলেন ২০১৪ সালের এশিয়া কাপে, ভারতের বিপক্ষে।
প্রথম ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের জন্য শিহরণ জাগানোর মতো। নবম উইকেট পড়ে যাবার পর মুশফিক হতাশ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে গিয়েও ফিরলেন না। কারণ, মুশফিককে সঙ্গ দিতে ভাঙ্গা হাত নিয়েই যে মাঠে নেমেছেন তামিম! ততক্ষণে কোথাও কোথাও প্রচারিত হয়েও গেছে এশিয়া কাপ থেকে তামিমের ছিটকে পড়ার কথা। সবকিছু ক্ষণিকের জন্য মিথ্যা করে দিয়ে দশম উইকেটে একটি বল আগলে রাখলেন তামিম। তাঁর পরের সবকিছুই রেকর্ড। দশম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের রান ৩২, তাও আবার মাত্র ১৬ বলে। এক হাতে ব্যাট করতে নেমে তামিম বুঝিয়েছেন, আহত বাঘ কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। তার প্রতিদানে শ্রীলঙ্কাকে লজ্জায় ডুবিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে বাংলাদেশ, যা পরবর্তী সব ম্যাচেই তাঁদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।