ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙবেন ওপেনাররা?
চলমান এশিয়া কাপ আসরে বাংলাদেশের ব্যাটিং যেন শুরুই হচ্ছে তিন উইকেট যাওয়ার পর থেকে। অন্তত টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা চোখে ধরা পড়েছে বিশেষত তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে। এই ড্যাশিং বাঁহাতি ওপেনার না থাকায় তাঁর অভাব পূরণ করতে পারছেন না কেউই। ফলে এশিয়াসেরার লড়াইয়ে ভারতের বিপক্ষে টপঅর্ডারের ব্যর্থতা ভাবাবে মাশরাফিদের।
২০১২ সালের পর থেকে বাংলাদেশ মাত্র দুবার ভারতের বিপক্ষে জয়লাভ করেছে। ২০১২ সালে ঢাকায় এশিয়া কাপে শচীন টেন্ডুলকারের ১১৪ রানের ইনিংস অনুজ্জ্বল করে দিয়ে সেই ম্যাচে জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে সেই ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরে রানার্সআপ হয় টাইগাররা। সেই ম্যাচে ২৯০ রানের লক্ষ্যে নেমে হাল ধরেছিলেন তামিম ইকবালই। তাঁর ৭০ রানের ইনিংস পথ দেখায় বাংলাদেশকে। মিডলঅর্ডারের ভূমিকা সব সময়ই ছিল। সেই ম্যাচে নাসির হোসেন, জহরুল ইসলাম, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের ইনিংসের সুবাদে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে যায়। সেই ম্যাচে বোলিংয়ে ততটা উজ্জ্বল ছিলেন না কেউই। তবে ২০১২ সালের ভারত দলের চেয়ে চলমান এশিয়া কাপের ভারত দল অনেক বেশি পরিণত। সুতরাং সেই জয়ের কথা না ধরাই শ্রেয়।
তবে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে হার মানে ভারত। কারণ, সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেই তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ঝড়ো শুরু ভড়কে দেয় ভারতকে। তাঁরা আউট হয়ে গেলেও নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান ও সাকিব আল হাসানের ছোট ছোট ইনিংসের সুবাদে ৩০৭ রানে দুই বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় টাইগাররা। সেই ম্যাচে অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমান নেন পাঁচ উইকেট। তাসকিন, মাশরাফি ও সাকিব আল হাসানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারত গুটিয়ে যায় মাত্র ২২৮ রানে। বলা চলে একমাত্র এই ম্যাচেই দলের সবাই নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন, যার ফলে হারতে হয় ভারতকে। সেই ম্যাচে খেলেছিলেন রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, মহেন্দ্র সিং ধোনি, রবীন্দ্র জাদেজা ও ভুবনেশ্বর কুমার। আজ শুক্রবার চলমান এশিয়া কাপের ফাইনালেও থাকছেন তাঁরা। একই আসরের পরের ম্যাচে মুস্তাফিজ-জাদুতে ২০০ রানে গুটিয়ে যায় ভারত। সেটাকে মুস্তাফিজের একক কারিশমা বলাই ভালো। কারণ, মাত্র ২০০ রান তাড়া করতে গিয়েও ৩০-এর কোটায় রান করেছেন সৌম্য, লিটন ও মুশফিক। একমাত্র অপরাজিত অর্ধশতক করেছিলেন সাকিব আল হাসান।
অর্থাৎ, ২০১২ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ যখনই ভারতের বিপক্ষে দল হিসেবে জয়লাভ করেছে, সেই ম্যাচে ঝড়ো শুরু এনে দিয়েছেন টাইগার ওপেনাররা। তবে চলমান এশিয়া কাপ আসরে কোনো ম্যাচেই মাত্র ২০ রানও আসেনি ওপেনিং জুটি থেকে। এমনকি দলীয় ৫ রানের মধ্যেই ওপেনিং জুটি ভেঙেছে প্রতিপক্ষের বোলাররা। তামিম ইকবাল না থাকায় যে ব্যর্থতা চেপে বসেছে ওপেনিং জুটির ওপরে, তা কি ব্যাটসম্যানরা ঝেড়ে ফেলতে পারবেন এই ম্যাচে? ইতিবাচক উত্তরের আশায় আছেন ভক্তরা।