ব্ল্যাটার-প্লাতিনি তিন মাস নিষিদ্ধ!
আগের দিন জানিয়েছিলেন, পরবর্তী সভাপতি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাবেন যেকোনো মূল্যে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটারের ‘দর্পচূর্ণ’! তাঁকে সাময়িকভাবে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ফিফার নীতিনির্ধারক কমিটি। একই শাস্তি হয়েছে উয়েফা সভাপতি মিশেল প্লাতিনিরও। দুজনের বিরুদ্ধেই ‘অপরাধমূলক’ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তদন্ত চলছে।
ব্ল্যাটার ও প্লাতিনির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদান-প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। সুইস কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্রান্সের সাবেক তারকা ফুটবলার প্লাতিনির সঙ্গে ২০ লাখ ডলারের ‘অনৈতিক’ লেনদেন করেছিলেন ব্ল্যাটার। যদিও ফিফা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত প্লাতিনি ফিফার হয়ে যে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তারই পারিশ্রমিক হিসেবে এই ২০ লাখ ডলার দেওয়া হয়েছিল।
তবে ফিফার নীতিনির্ধারক কমিটি এমন ব্যাখ্যা মেনে নেয়নি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই কমিটি জানিয়েছে, ‘এই সময়ে (তিন মাস) দুজনই (ব্ল্যাটার ও প্লাতিনি) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব ধরনের ফুটবল কার্যক্রমে নিষিদ্ধ থাকবেন।’
শুধু ব্ল্যাটার-প্লাতিনি নন, শাস্তি হয়েছে আরো দুজনের। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ফিফার পরবর্তী নির্বাচনে প্লাতিনি ছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন চুং মং-জুন। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এই দক্ষিণ কোরিয়ান ৬ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। এক লাখ সুইস ফ্রাঁ জরিমানাও দিতে হবে ফিফার এই সাবেক সভাপতিকে। ব্ল্যাটারের ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত জেরোম ভালকেও তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। ফিফার এই সদ্যবিদায়ী মহাসচিবের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের টিকিট-কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
গত মে মাসে টানা পঞ্চমবারের মতো ফিফা সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার ঠিক চারদিন পর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন ব্ল্যাটার। তবে পরবর্তী সভাপতি নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফিফার চারটি প্রভাবশালী স্পন্সর কোকাকোলা, ভিসা, ম্যাকডোনাল্ডস ও বাডওয়াইজার এতদিন ‘অপেক্ষা’ করতে রাজি হয়নি। গত সপ্তাহে যত দ্রুত সম্ভব ব্ল্যাটারকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল এই চারটি প্রতিষ্ঠান।
একটি জার্মান ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্ল্যাটার অবশ্য জানিয়েছিলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারির একদিন আগেও দায়িত্ব ছেড়ে দিতে তিনি রাজি নন। কিন্তু তার অনেক আগেই শাস্তি পেতে হল ফিফার একসময়ের ‘দণ্ডমুণ্ডের কর্তা’কে।