শেবাগের ‘সাদামাটা’ সংবর্ধনা
তাঁর মানের ব্যাটসম্যানের অনেক বড় সংবর্ধনা পাওয়া উচিত ছিল। তিনি ভারতের বহু জয়ের নায়ক, তাঁর ব্যাটের আঘাতে বহুবার ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেছে প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণ। অথচ কিছুদিন আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানো বীরেন্দর শেবাগের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হলো একেবারেই সাদামাটা। যেখানে ছিলেন না তাঁর কোনো বিখ্যাত সাবেক সতীর্থ।
বৃহস্পতিবার থেকে দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ টেস্ট। সকালে খেলা শুরু হওয়ার আগে শেবাগের সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। মা কৃষ্ণা, স্ত্রী আরতী আর দুই ছেলে আর্যবীর ও বেদান্তকে সঙ্গে নিয়ে চিরচেনা মাঠে হাসিমুখেই এসেছেন ‘নজফগড়ের টেন্ডুলকার’। সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে শেবাগের হাতে একটি সুদৃশ্য ট্রফি তুলে দেন বিসিসিআই সচিব অনুরাগ ঠাকুর।
ট্রফি হাতে টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান (তা-ও দুটো ত্রিশতক) ধন্যবাদ দিলেন সবাইকে। সবার আগে বাবা এবং ক্রিকেট-জীবনের প্রথম দিকের কোচ এ এন শর্মার অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করলেন শেবাগ, ‘ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ায় আমার বাবাকে ধন্যবাদ দিতে চাই। তিনি সব ধরনের ইচ্ছাপূরণের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন আমাকে। ধন্যবাদ দিতে চাই আমার সব কোচকে। বিশেষ করে এ এন শর্মাকে। তিনিই আমাকে ক্রিকেটার বানিয়েছিলেন।’ দিল্লির অনূর্ধ্ব-১৯ দলে এ এন শর্মাই প্রথম সুযোগ দিয়েছিলেন শেবাগকে। নিজের রাজ্যের যুব দলে খেলেই একদিন তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন ভারতের জাতীয় দলে।
তাঁর ওপর শচীন টেন্ডুলকারের প্রভাবের কথা কারো অজানা নয়। কিশোর বয়সে টেন্ডুলকারের ব্যাটিং দেখেই ক্রিকেটের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন শেবাগ। প্রিয় ব্যাটসম্যানকে তাই ধন্যবাদ জানালেন। ধন্যবাদ দিলেন ভারতীয় দলে তাঁর অধিনায়কদেরও, ‘আমি শচীন টেন্ডুলকারকে ধন্যবাদ দিতে চাই। ধন্যবাদ দিতে চাই আমার প্রথম অধিনায়ক অজয় জাদেজা এবং অন্যান্য অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী, রাহুল দ্রাবিড় ও অনিল কুম্বলেকে।’ তবে মহেন্দ্র সিং ধোনির নাম উচ্চারণ করেননি। ধোনির অধিনায়কত্বের সময় দল থেকে বাদ পড়াই হয়তো তার কারণ!
টেস্ট-ওয়ানডে মিলিয়ে প্রায় ১৭ হাজার রানের মালিক ভক্তদের কাছেও কৃতজ্ঞতা জানালেন সবশেষে, ‘সুসময় আর দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য আমার সব ভক্তকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাঁরাই আমাকে শেবাগ বানিয়েছেন।’