মেসির নৈপুণ্যে উদ্ভাসিত বার্সা
এ বছরের শুরুটা কী বাজেভাবেই না করেছিল বার্সেলোনা! ৪ জানুয়ারি বছরের প্রথম ম্যাচেই রিয়াল সোসিয়েদাদের কাছে হেরে গিয়েছিল ১-০ গোলে। এরপর কোচ লুইস এনরিকের সঙ্গে মেসির ‘দ্বন্দ্ব’ নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল স্প্যানিশ গণমাধ্যমে। মেসি বার্সা ছেড়ে দেবেন কি না, এমন গুজবও ছড়িয়ে পড়েছিল। অথচ এবারের ফুটবল-মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসে সেই বার্সার সামনে দুর্দান্ত সাফল্যের হাতছানি। স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা জিতে নেওয়া কাতালানরা কোপা দেল রে আর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালেও উঠেছে। ২০০৮-০৯ মৌসুমের পর আবার ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বার্সার সাফল্যের প্রধান রূপকার যে লিওনেল মেসি, তা বলাই বাহুল্য।urgentPhoto
রোববার আতলেতিকো মাদ্রিদকে ১-০ গোলে হারিয়ে ২৩তম লিগ শিরোপা জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছে লুইস এনরিকের শিষ্যরা। আর এই জয়েও মুখ্য ভূমিকা মেসির। জয়সূচক গোলটি এসেছে তাঁর পা থেকেই।
ট্রেবল জয়ের পথে তাই এক ধাপ এগিয়ে গেছে বার্সেলোনা। আগামী ৩০ মে কোপা দেল রে’র ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে অ্যাথলেতিক বিলবাওয়ের। ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে এই ম্যাচে বার্সাই ফেভারিট। এরপর ইউরোপসেরা হওয়ার লড়াইয়ে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের প্রতিপক্ষ জুভেন্টাস। আগামী ৬ জুন বার্লিনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা-লড়াইয়ে নামবে স্প্যানিশ ও ইতালিয়ান লিগের দুই চ্যাম্পিয়ন।
বছর শুরুর সেই হতাশাজনক ম্যাচই যেন পাল্টে দিয়েছিল বার্সাকে। পরের সপ্তাহেই গতবারের লা লিগা চ্যাম্পিয়ন আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে জ্বলে উঠেছিলেন মেসি, নেইমার ও লুইস সুয়ারেজ। আক্রমণভাগের তিন তারকার লক্ষ্যভেদে কাতালানরা পেয়েছিল ৩-১ গোলের জয়। ‘এমএসএন’ নামে পরিচিতি পেয়ে যাওয়া মেসি-সুয়ারেজ-নেইমার এবারের মৌসুমে মোট ১১৫টি গোল করে দলকে এগিয়ে দিয়েছেন সাফল্যের পথে। ছয় বছর আগের ট্রেবলজয়ী মৌসুমেও ১০০-র বেশি গোল করেছিলেন মেসি, থিয়েরি অঁরি ও স্যামুয়েল এতো।
এ মৌসুমে যথারীতি আক্রমণভাগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেসি। এবার সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৪টি গোল করেছেন চারবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। এর মধ্যে লা লিগায় তাঁর ৪১ গোল, আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১০টি। যার মধ্যে আছে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে জোড়া গোলও। শুধু নিজে গোল করা নয়, সতীর্থদের দিয়ে গোল করানোতেও মেসি ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। আর্জেন্টাইন তারকার ৩০টি ‘অ্যাসিস্ট’ সেই সাক্ষ্যই দিচ্ছে।
মেসি-নেইমারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বেশ কয়েকবার প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়েছে বার্সেলোনা। লা লিগার ৩৭ ম্যাচের ১১টিতেই প্রতিপক্ষের জালে অন্তত পাঁচবার বল জড়িয়েছে কাতালানরা। এর মধ্যে গত মাসে কর্দোবাকে হারিয়েছে ৮-০ গোলে। এ ছাড়া গ্রানাদা, এলচে, রায়ো ভায়েকানো ও গেতাফের জালে বল পাঠিয়েছে ছয়বার করে।
সকালের শুরু যে সব সময় পুরো দিনের আভাস দিতে পারে না, ২০১৫ সালে বার্সেলোনা যেন সে কথাই প্রমাণ করে চলেছে।