বাংলাদেশ-আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টির রোমাঞ্চ শুরু শুক্রবার
টেস্টে ঐতিহাসিক জয়ের পর ওয়ানডে সিরিজে এসেই বড় হোঁচট খায় বাংলাদেশ। আফগানদের কাছে সিরিজ হারের লজ্জা পায় সাকিব-লিটনরা। হোয়াইটওয়াশ এড়ালেও সিরিজ হারানোর আক্ষেপ রয়ে গেছে স্বাগতিকদের। সেই আক্ষেপ ঘোচাতে এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানদের আতিথ্য দেবে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
নিজেদের পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডেতে বাংলাদেশ এখন বেশ শক্তিশালী। তবে সেই ধারাবাহিকতা আফগানিস্তানের বিপক্ষে ধরে রাখতে পারেনি লিটন দাসের দল। ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মত দলকে কঠিন চ্যালেঞ্জ জানানো দলটাই কিনা আফগানদের বিপক্ষে এভাবে সিরিজ হারল। যা মেনে নেওয়া কঠিন সমর্থকদের পক্ষে।
রঙিন পোশাকে বরাবরই আফগানরা সমীহ জাগানিয়া দল। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান অন্তত সেই কথাই বলে। তারুণ্য-অভিজ্ঞতা নির্ভর আফগানরা সুযোগ পেয়েই বাংলাদেশকে সিরিজ হারাতে ভুল করেনি। ওয়ানডের পর এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে চোখ রশিদ খানের দলের।
ওয়ানডে সিরিজ হাতছাড়া হলেও, টি-টোয়েন্টিতে কোনো ছাড় নয়; সিরিজ জয়ে চোখ অধিনায়ক সাকিবের। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানান,'আমার কাছে মনে হয়, আমরা দল হিসেবে তখনই ভালো খেলি, যখন অন্য দল নিয়ে চিন্তা না করি। আর আফগানদের স্পিনারদের নিয়ে আমি অতটা ভাবতে চাই না। নিজেদের পারফরম্যান্সের ওপর বেশি ফোকাস করতে চাই’।
টি-টোয়েন্টি আফগানরা কতটা শক্তিশালী তা কম-বেশি সবারই জানা। বিশেষ করে তাদের স্পিন আক্রমণ বিশ্বসেরা। রশিদ, নবী, মুজিব এর পাশাপাশি পেসার ফারুকী বাংলাদেশের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ। ওয়ানডে সিরিজেও দেখা গেছে যার প্রতিফলন।
ফল নিয়ে চিন্তা না করে সেরাটা দেওয়ার তাগিদ আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান,‘আমি দলীয়ভাবে চিন্তা করি। আমাদের জন্য এটি প্রস্তুতি। আমার কথা বলতে গেলে, আমি ফল নিয়ে চিন্তা করি না। এই বার্তা স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে। জিততে হবে এমন কিছু ঠিক করে দেওয়া যাবে না। আমার কাছে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রস্তুতি এবং বোলিং, ব্যাটিং কিংবা ফিল্ডিং যেটাই হোক তা শতভাগ দেওয়া।’
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বরাবরই হাইস্কোরিং ম্যাচ হয়ে থাকে। সবশেষ আয়ারল্যান্ড সিরিজ সেই বার্তাই দিচ্ছে। আফগান স্পিনারদের কথা মাথায় রেখে ভুলেও স্পিন সহায়ক উইকেট বানাবে না বাংলাদেশ। সাধারণত টসে জেতা দল শুরুতে ফিল্ডিং করে সিলেটে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী রান তাড়া করা দলই সিলেটে বেশি ম্যাচে জিতেছে। ধারণা করা হচ্ছে চিরচেনা ব্যাটিং বান্ধব উইকেটই হতে যাচ্ছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে।
আফগানদের জন্য এই ম্যাচে ভয়ের কারণ হতে পারে অধিনায়ক সাকিব ও ওপেনার লিটন কুমার দাস। টি-টোয়েন্টিতে সাকিব-লিটন বাংলাদেশের জন্য ভরসার অন্যতম নাম। বাংলাদেশকে জিততে হলে এই দুইজনের নিজেদের সেরা ছন্দে থাকাটা অনেক জরুরি। শেষ ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন লিটন।
আফগানিস্তান দলে বাড়তি নজর থাকবে ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও পেসার ফজলহক ফারুকীর ওপর। ওয়ানডে সিরিজে এই দুই ক্রিকেটার দুর্দান্ত খেলেছেন। এছাড়াও টি-টোয়েন্টিতে তাদের পরিসংখ্যানও চোখ কপালে ওঠার মতো। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই দুইজনকে নিয়ে বাড়তি পরিকল্পনা করতে হবে সাকিবের দলের।
অতীত পরিসংখ্যান অবশ্য আফগানদের পক্ষে। দুই দলের ৯ দেখায় ৬টিতেই জিতেছে আফগানরা। বাকি ৩ ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। তাই অতীত পরিসংখ্যান মাথায় নিতে নারাজ বাংলাদেশ। লড়াইটা শুধু বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের নয়, লড়াইটা আইপিএলে একই দলের হয়ে খেলা দুই বন্ধু রশিদ-সাকিবের। রশীদ নাকি সাকিব, কে হাসে শেষ হাসি- উত্তরটা সময়ই দেবে। খেলা শুরু সন্ধ্যা ৬টায়।
বাংলাদেশ সম্ভাব্য একাদশ: রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তাওহিদ হৃদয়, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, শামিম হোসেন পাটোয়ারি, নাসুম আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।
আফগানিস্তান সম্ভাব্য একাদশ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, হযরতউল্লাই যাযাই, মোহাম্মদ নবী, নাজিবউল্লাহ জাদরান, সিদ্দিকুল্লাহ অটল, করিম জানাত, রশিদ খান (অধিনায়ক),আজমতউল্লাহ ওমরজাই, ফজলহক ফারুকী ও মুজিব উর রহমান।