ভারতকে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ
ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ ছিল সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ। সময়ের ব্যবধানে তা ছাপিয়ে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ এখন ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। বয়সভিত্তিক পর্যায় কিংবা জাতীয় দল; ছাড় দিতে চায় না কেউ কাউকে। যুব এশিয়া কাপের সেমিফাইনালে এমনই এক লড়াইয়ে ভারতকে চার উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমি মাঠে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪২.৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৮৮ রান তোলে ভারত। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মারুফ মৃধা। জবাবে ৪২.৫ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। আগামী রোববার (১৭ ডিসেম্বর) ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আরব আমিরাত।
১৮৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় দুই রানের মাথায় ওপেনার জিসান আলমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে ফেরেন জিসান। শুরুর চাপ সামলে ওঠার আগেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এবার সাজঘরের পথ ধরেন রিজওয়ান। ১৯ বলে ১৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
পাঁচ ওভারের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেই চাপ আরও বাড়ে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থাকা আশিকুর রহমান শিবলীর বিদায়ে। দলীয় ৩৫ রানে রান আউট হয়ে ফেরেন শিবলী। সাজঘরে ফেরার আগে ২২ বল খেললেও সাত রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
এরপর তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তোলার দায়িত্বটা নেন আরিফুল ইসলাম ও আহরার আমিন। এই দুই ব্যাটার ভারতীয় বোলারদের পাত্তা না দিয়ে দারুণ এক জুটিতে জয়ের ভিত গড়েন। তবে দলীয় ১৭২ রানে আরিফুলের বিদায়ে ভাঙে এই দুজনের ১৩৯ রানের জুটি। ৯০ বলে ৯৪ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এরপর দলীয় ১৮৪ রানে শিহাবের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সাত বলে ৯ রান করেন তিনি। জয় থেকে মাত্র দুই রান দূরে থাকতে আহরারও বিদায় নেন। ১০১ বলে ৪৪ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি ভারতের। প্রথম ওভারে মারুফের দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার আদর্শ সিং। দুই বলে দুই রান আসে তার ব্যাট থেকে। শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ফের ধাক্কা খায় ভারত। এবারও শিকারীর ভূমিকায় মারুফ। দলীয় ১০ রানের মাথায় তুলে মারতে গিয়ে শিহাবের হাতে ধরা পড়েন আরশিন কুলকার্নি। ছয় বলে খেললেও এক রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
দলীয় ১৩ রানের মাথায় অধিনায়ক উদয় শাহারানকে হারিয়ে আরও চাপে পড়ে ভারত। ১০ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। এরপর দ্রুত আরও তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। তবে মুশির খান ও মুরুগান অভিষেকের ব্যাটিং দৃঢ়তায় চাপ সামাল দেয় তারা।
এই দুই ব্যাটার মিলে গড়েন ৮৪ রানের জুটি। মাঝে ৬১ বলে ফিফটি তুলে নেন মুশির। অবশেষে দলীয় ১৪৫ রানে রাব্বির বলে আরিফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুশির। বাকি ব্যাটাররা মিলে ভারতকে আর বেশিদূর নিতে পারেনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল : ৪২.৪ ওভারে ১৮৮/১০ (আদর্শ ২, কুলকার্নি ১, মলিয়া ১৯, উদয় ০, শচীন ১৬, মুশির ৫০, অভিনিশ ০, মুরুগান ৬২, পান্ডে ১, রাজ ১১, তিওয়ারি ৬; মারুফ ১০-১-৪১-৪, ইমন ৯-১-৩১-০, বর্ষন ৭-০-৩৯-২, রিজওয়ান ২-০-১২-০, জীবন ৮.৪-০-২৯-২, রাব্বি ৬-০-৩৩-১)
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল : ৪২.৫ ওভারে ১৮৯/৬ (শিবলী ৭, জিসান ০, রিজওয়ান ১৩, আরিফুল ৯৪, আহরার ৪৪, শিহাব ৯, রাব্বি ৩, জীবন ২ ; রাজ ১০-১-৪৭-২, তিওয়ারি ৯-১-৩৫-৩, পান্ডে ১০-২-৪৪-০, কুলকার্নি ৭.৫-০-১৯-০, মুরুগান ৪-০-২২-০, মুশির ২-০-১৪-০)
ফলাফল : বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল চার উইকেটে জয়ী।