ছক্কার বৃষ্টি ঝরানো এই হায়দরাবাদকে থামাবে কে?
পাড়ার ক্রিকেটে ছোটদের খেলার মাঝে হঠাৎ আগমন ঘটত বড় ভাইদের। ছোট ভাইদের কাছ থেকে ব্যাটটা নিয়ে বল করার আদেশ দিতেন। বল আসত, তিনি শট মারতেন। এরপর বল আর খুঁজে পাওয়া যেত না। বড় ভাইয়েরা সেই দুই এক বল খেলতেন ছক্কা মারবেন বলে। ব্যাপারখানা এমন—এলেন, দেখলেন, ছয় মারলেন, চলে গেলেন।
আইপিএল ২০২৪ এমন এক বড় ভাইয়ের দেখা পেয়েছে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তারা মাঠে নামে, এক সূত্র ধরে খেলে। সূত্রটি হলো, কোনো সূত্রই মানা যাবে না। মাঠে নামার পর যেভাবে যেমন বলই আসুক, সপাটে ব্যাট চালাও, ছক্কা হাঁকাও। আমরা করব জয়ের মতো তাদের স্লোগান যেন হয়ে গেছে, আমরা মারব ছয়!
হায়দরাবাদের কাছে কারও কোনো পাত্তা নেই। বোলার বিশ্বমানের না কি পাড়ার, ইয়র্কার দিচ্ছে না কি বাউন্সার, অত সময় কই! কেবল ছক্কা মারতে হবে। আইপিএলে গতকাল বুধবার (৮ মে) যেমন লখনৌ সুপার জায়ান্টের বিপক্ষে টর্নেডো তুলেছেন হায়দরাবাদের দুই ব্যাটার ট্রাভিস হেড ও অভিষেক শর্মা। ১৬৬ রানের লক্ষ্য টপকে যান মাত্র ৯.৪ ওভারে। ৩০ বলে ৮৯ করা হেড ছক্কা মারেন আটটি। অভিষেকের ২৮ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে ছক্কা ছিল ছয়টি।
দুজন মিলে ইনিংসে ১৪টি ওভার বাউন্ডারি মারেন। তাতে, ভাঙেন ছয় বছর পুরোনো রেকর্ড। আইপিএলের ইতিহাসে এক মৌসুমে কোনো দলের সর্বোচ্চ ছয় মারার রেকর্ডটি এখন হায়দরাবাদের। ১২ ম্যাচে ১৪৬টি ছক্কা মেরেছে দলটি। ভেঙেছে ২০১৮ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের মারা ১৪৫ ছক্কার রেকর্ড। চেন্নাইয়ের রেকর্ড পরের বছরই ভাঙতে পারত। ২০১৯ সালে ১৪৩টি ছক্কা আসে কলকাতা নাইট রাইডার্স ব্যাটারদের ব্যাট থেকে। এছাড়া, ২০১৬ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ১৪২টি এবং গত বছর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ১৪০টি ছক্কা মারেন।
হায়দরাবাদের হাতে গ্রুপ পর্বের আরও দুটি ম্যাচে আছে। দলটি এই মূহুর্তে আছে পয়েন্ট টেবিলের তিনে। প্লে-অফে উঠতে পারলে ম্যাচ সংখ্যা বাড়বে। পাশাপাশি ছক্কার সংখ্যা তরতর করে ওপরে উঠবে, সেটি দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। আর তারচেয়ে বড় কথা, চলতি আসরে সবচেয়ে বেশি ছক্কায় তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দিল্লি ক্যাপিটালস বেশ পিছিয়ে আছে। তাদের ছক্কার সংখ্যা ১২০টি।