দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
লক্ষ্যটা সহজ। জিততে হলে বাংলাদেশকে পাড়ি দিতে হবে ২৩৫ রান। এই রান তাড়ায় শুরুতে উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আশা জাগান সৌম্য সরকার ও নাজমুল হোসেন শান্ত। মাঝে সৌম্য বিদায় নিলে মেহেদী হাসান মিরাজও উইকেটে এসে লড়াইয়ের আভাস দেন। কিন্তু শান্ত ও মিরাজ দুজনেই থিতু হয়ে ফিরলেন সাজঘরে। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের বিদায়ে শারজাতে হতাশা বাড়ল বাংলাদেশের।
আফগানিস্তানের রানের জবাব দিতে নেমে দলীয় ১২ রানে প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৩ রান করে তানজিদ তামিম ফেরার পর দ্বিতীয় জুটিতে বাংলাদেশকে পথ দেখান সৌম্য ও অধিনায়ক শান্ত। দুজনের ব্যাটে চড়ে পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ৫৪ রান। এরপর ৩৩ রানে সৌম্য বিদায় নিলে মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়েন শান্ত। এই জুটিতেও আসে ৫৫ রান।
শান্ত ও মিরাজের ব্যাটে যখন জয়ের আশা বাড়ল তখনই দুজন বিদায় নিলেন। ব্যক্তিগত ৪৭ রানে আউট হয়েছেন শান্ত। মিরাজ ফিরেছেন ২৬ রান করে। এর পর উইকেটে এসে দ্রুত বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ। রশিদের বলে মাত্র ২ রানে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৪৯.৪ ওভারে ১০ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৩৫ রান তুলেছে আফগানিস্তান। সুতরাং জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ২৩৬ রানের।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন টসের ভাগ্য জিতে নেয় আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি। টস জিতে তিনি বেছে নেন ব্যাটিং। তবে আগে ব্যাটিংয়ে শুরুতেই চরম হতাশা দেখে আফগানরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় তার দল।
বাংলাদেশি পেসার তাসকিন আহমেদের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে আউট হন রহমানউল্লাহ গুরবাজ।তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় মুশফিকুর রহিমের হাতে। ৫ রানে বিদায় নেন গুরবাজ, দলীয় ৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
ওপেনিং জুটি ভাঙার পর দ্বিতীয় উইকেটে জুটি গড়তে চেয়েছিল আফগানরা। সেটি হতে দেননি মুস্তাফিজুর রহমান। দ্বিতীয় উইকেটে ২৩ রানের বেশি তুলতে পারেননি সেদিকুল্লাহ আতাল ও রহমত শাহ। মাত্র দুই রান করে সাজঘরের পথ ধরেন রহমত। দলীয় ৩০ রানে রহমতকে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান মুস্তাফিজ।
দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর আাবরও আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। এবার তার শিকার আতাল। ৩০ বলে ২১ রান করে লেগবিফোর হয়ে বিদায় নেন তিনি। ৩৫ রানে ঘটে আফগানদের তৃতীয় উইকেটের পতন। একই ওভারে ফিজ তুলে নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। তিন বল খেলে রানের খাতা খোলার আগেই মুশফিকের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। স্কোরবোর্ডে ৩৫ রান তুলতেই চার উইকেট হারায় আফগানরা।
চাপে পড়া দলকে উদ্ধার করতে গুলবাদিন নাইবের সঙ্গে জুতি গড়ার চেষ্টা করেন শাহিদি। তবে তাসকিন তার দ্বিতীয় স্পেলে এসে সেই চেষ্টা ভেস্তে দেন। নাইবকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে করেন মাঠছাড়া। ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের ওপর শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি পুল করে শর্ট মিড উইকেটে থাকা তানজিদ হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২২ রানে ফেরেন নাইব।
এরপর মোহাম্মদ নবিকে জুটি গড়েন শাহিদি। নিজে তুলে নেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। নবিও পান হাফসেঞ্চুরির দেখা। উইকেটে জমে যাওয়া দুই ব্যাটারকেও বিদায় করেন মুস্তাফিজ ও তাসকিন। প্রথমে শাহিদিকে বিদায় করে শতরানের জুতি ভাঙেন মুস্তাফিজ। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টাম্পে টেনে এনে আউট হন হাশমাতউল্লাহ শাহিদি। ফেরার আগে ২ চারে ৯২ বলে ৫২ রান করেন আফগান অধিনায়ক।
শাহিদি ফিরলেও বাংলাদেশকে ভোগান নবি। তিনি দলকে টানেন, নিজেও এগিয়ে যান শতকের পথে। অবশেষে তাসকিনের বলে হার মানে তার ইনিংস। ৮৪ রান করা নবিকে ডিপ স্কয়ার লেগে তানজিদের হাতে ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন তাসকিন। ৭৯ বলে নবির ইনিংসে ছিল চার বাউন্ডারি আর তিন ছক্কা। নবি ফেরার পর শেষ পর্যন্ত ২৩৫ রানে গিয়ে থামে আফগানিস্তান।